আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ২৫ নভেম্বর: গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে ছ’মাসের জন্য পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তৃণমূল নেতা জটিল মণ্ডলকে। একইভাবে ময়ূরেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের ক্ষমতা খর্ব করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। রবিবার রাতে বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকের কর্মীদের ডাকা সভায় ওই নির্দেশ দেন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
শনিবার বীরভূমের মল্লারপুরে ময়ূরেশ্বর বিধানসভার বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অঞ্চল ও বুথ সভাপতিদের বক্তব্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বার বার উঠে আসে। এরপরেই ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকের কার্জকর্তাকে বোলপুরে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানেই ছ’মাসের জন্য পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেন অনুব্রত মণ্ডল। তার বদলে দায়িত্ব দেওয়া হয় সহ সভাপতি দীপালি কোনাইকে। অবশ্য পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনা করবেন পাঁচ সদস্যের কমিটি। ওই কমিটি গঠন করে ব্লক সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র ময়ূরেশ্বরের অবজারভার চন্দ্রনাথ সিনহাকে পাঠাবে।
যদিও এনিয়ে খুব বেশি কথা বলতে চাননি জটিল মণ্ডল। তিনি বলেন, “বেশ কিছুদিন থেকে অসুস্থ রয়েছি। পঞ্চায়েত সমিতিতে যেতে পারছিলাম না। তাই দল কিছুদিনের জন্য বিশ্রামে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে”।
তবে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জটিল মণ্ডলের বিরুদ্ধে কিছু অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। যেমন নারায়ণঘাটি গ্রামে একটি পুকুর বুঁজিয়ে তার মধ্যে পঞ্চাশ ফুট উঁচু করে বালি রাখা হয়েছে। বেশ কিছু কাজ নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সভা চলাকালীন এনিয়ে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। যদিও জটিল মণ্ডল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, সব মিথ্যা। সভায় ব্লক কমিটির ২২ জন সদস্যর মধ্যে ১৭ জন এবং ৭ টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬ জন অঞ্চল সভাপতি জটিল মণ্ডলের বিরোধীতা করেন। এমনকি তারা অনুব্রত মণ্ডলের সামনে একযোগে ইস্তফা দেওয়ার হুমকি দেন। তারপরেই জটিল মণ্ডলকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
দলের ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লক সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র বলেন, “দলের মধ্যে কিছুটা মনমালিন্য থাকায় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে ছয় মাসের জন্য বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে সমিতিতে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে ময়ূরেশ্বর অঞ্চল সভাপতি লালু শেখের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছিল তা মিটে গিয়েছে। সমস্ত সদস্য বৈঠক করে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে।