শতাধিক হিন্দুর নরসংহার করে মন্দির ধ্বংস করেছিল পাক সেনা, ঢাকার সেই মন্দির উদ্বোধন করলেন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ

আমাদের ভারত, ১৭ ডিসেম্বর: তিন দিনের বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সেখানে তিনি ঢাকায় পাক সেনার হাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক রমণা কালীমন্দিরে পুনর্নির্মাণের পর দ্বার উদঘাটন করেন। এই মন্দিরের পুর্ননিমানে ভারত সরকারও বিশেষ সহোযোগিতা করেছে। জানা যায়, এই মন্দিরে শতাধিক হিন্দুর হত্যালীলায় মেতেছিল পাক সেনা।

১৯৭১ সালে অপারেশন সার্চলাইটের নামে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাক সেনা এক অভিযান চালিয়েছিল, আর তাতেই সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ঢাকার রমণা কালী মন্দির। এমনকি কালীমন্দিরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানের সেনা। শুক্রবার ঢাকায় সেই কালীমন্দিরের সংস্কার হওয়ার পর দ্বার উদঘাটন করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সস্ত্রীক মন্দিরে পুজো দেন রাষ্ট্রপতি।

জানা যায়, সেই সময় ওই মন্দিরে উপস্থিত প্রায় একশোর বেশি হিন্দুর নরসংহার করেছিল পাকসেনা। মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে এই নৃশংস হত্যাকান্ড চালিয়েছিল পাকসেনা। নরসংহারের পরে মন্দিরে ভাঙ্গচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।

২০১৭ তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঘোষণা করেছিলেন, ভারত এই মন্দির পুনর্নির্মাণে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে। ভারতের সহযোগিতায় মন্দিরের পুনর্নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। সেই পূনর্নিমিত মন্দিরে উদ্বোধন করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ প্রথমবার বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে জয় ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

রামনাথ কোবিন্দ বলেন,”এই মন্দির নির্মাণের পেছনে মা কালীর আশীর্বাদ রয়েছে। আজ সকালে আমি ঐতিহাসিক রমনা কালী মন্দিরে গিয়েছিলাম। আমার সৌভাগ্য যে সংস্কার হওয়া নতুন মন্দির উদ্বোধন করতে পেরেছি। মা কালীর আশীর্বাদ ছাড়া এটা সম্ভব ছিল না। আমাকে জানানো হয়েছে, দুই দেশের সরকারের সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ এই মন্দির নির্মাণের সাহায্য করেছে। পাক সেনার হামলায় অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল সেই সময়। মন্দিরটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক বন্ধনের প্রতীক। এই মন্দির দর্শন ও আমার বাংলাদেশ সফরের একটি শুভ সমাপ্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকল।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *