ঝালদায় তৃণমূলের বুথ সভাপতির নামে বাংলা আবাস যোজনার টাকা পেলেন অন্যজন, প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে ধর্নায় বঞ্চিত প্রফুল্ল মাহাতো

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ২০ জুন: তৃণমূলের এক বুথ সভাপতির নামে বাংলা আবাস যোজনার টাকা আত্মসাৎ করলেন অন্য একজন। ওই তৃণমূলের নীচু তলার নেতার আইডি অন্য ব্যক্তি ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল ঝালদা ১ ব্লকের মাঠারি খামার গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এতে সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েতের যোগ সাজোশ রয়েছে বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ নিয়ে বিষয়টি জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, বিডিওকে বার বার জানিয়েও সুরাহা না হওয়ায় আজ পঞ্চায়েতের সামনে ধর্নায় বসলেন বঞ্চিত ব্যক্তি। পঞ্চায়েত কার্যালয়ের পাশেই পলিথিনের ছাউনির নিচে বসে প্রশাসনের গাফিলতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মৌন প্রতিবাদ জানান তিনি।

ঝালদা ১ ব্লকের মাঠারি খামার গ্রাম পঞ্চায়েতে অন্তর্গত ফকিরডি গ্রামের বাসিন্দা প্রফুল্ল মাহাতো। তিনি তৃণমূলের স্থানীয় বুথ সভাপতি। পেশায় সাধারণ গৃহ শিক্ষক। বাড়ির অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। ২০১৭ সালে ব্লক থেকে যখন আবাস যোজনার জন্য সার্ভে হয়েছিল তাতে বাড়ির এবং পরিবারের আর্থিক অবস্থার নিরিখে তাঁর নামে একটি আইডি ইস্যু হয়। আবাস যোজনার বাড়ির দাবিদারের মধ্যে তিনি হতে পারেন। তবুও তিনি সেই সময় আবাস যোজনার জন্য কোনও আবেদন করেননি। পরে তিনি জানতে পারেন তাঁর আইডি ব্যবহার করে একই নামের অন্য একজন এর সুবিধা পেয়েছেন। যাঁর ছেলে সেনাতে কর্মরত। আবার সচ্ছ্বল পরিবারও। বিষয়টি লিখিতভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে এর বিহিত চান বঞ্চিত প্রফুল্ল মাহাতো। পর্যায়ক্রমে চার বছর ধরে বিডিও, এসডিও এমনকি জেলাশাসককেও জানান তিনি। নিস্ফল হয় তাঁর আবেদন। দুর্নীতি স্বীকৃতি পায় সরকারি খাতায়। তাই শেষ পর্যন্ত ধর্নায় বসলেন প্রফুল্ল মাহাতো। তিনি বলেন, “আমার নামের বাড়ির টাকা ফিরে না পাওয়া বা সুবিচার না পেলে ধর্ণা থেকে উঠব না।”

বিষয়টি নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান হেমন্ত মাহাতো জানান, “এটা ২০১৬-২০১৭-র ঘটনা। আমরা সেই সময় ক্ষমতায় ছিলাম না। সেই সময় বিডিও দফতর থেকেই রেজিস্ট্রেশন হতো। আমরা এই পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় এসেছি ২০১৮ সালে। তাই বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে পারব না। তবুও আমরা বিষয়টি গুরুত্বর সাথে দেখছি যাতে প্রফুল্ল বাবু সুবিচার পান।”

এর আগে ওই পঞ্চায়েত সিপিএমেরই দখলে ছিল। ব্লক থেকে আবাস যোজনার রেজিস্ট্রেশন তখন হলেও পঞ্চায়েতের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই ভুল নাকি দুর্নীতি সেটা প্রশাসনিক তদন্তে উঠে আসবে। আপাতত এটা পরিষ্কার একজন আবাস যোজনার দাবিদার বঞ্চিত রইলেন, সুবিধা পেলেন আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *