জে মাহাতো, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ নভেম্বর: যে চিনা বাতি তাদের জীবন প্রদীপের নীচে অন্ধকার ঘনিয়ে রেখেছিল এবার তা কিছুটা দূর হওয়ার আশা করছেন মৃৎশিল্পীরা। বিগত কয়েক দশক ধরে বৈদ্যুতিক চিনা প্রদীপের দাপটে মৃৎ শিল্পীদের ব্যবসা ব্যাপকভাবে মার খেয়েছে। এবছর করোনার কারণে দুর্গাপুজো বা লক্ষ্মী পুজোতেও সেভাবে লক্ষ্মী সদয় হয়নি তাদের উপর। ইদানিং ভারত – চীন সীমান্ত অঞ্চলের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সে দেশের সঙ্গে ভারতের সু-সম্পর্ক নেই বললেই চলে। ফলে ভারতে বাতিল হয়েছে চীনা দ্রব্যের বিক্রি। তাই এবার দীপাবলিতে চীনা বাতির প্রভাব অনেকটাই কমতে পারে বলে মাটির প্রদীপের কারিগররা মনে করছেন। এই পরিস্থিতিতে আশায় বাঁচে চাষা সেজে কোমর বেঁধে মাটির প্রদীপ তৈরি করছেন তারা। এবার বাজারে চীনাবাতির সরবরাহ কমে গেলে মাটির প্রদীপে মানুষের ঝোঁক বাড়বে এই আশায় নতুন করে বুক বাঁধছেন তারা। এজন্য আসন্ন কালীপুজো অর্থাৎ আলোর উৎসব দীপাবলির চাহিদা পূরণে জোর কদমে প্রদীপ তৈরীর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বানাচ্ছেন তুবড়ির খোলও।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানার কেদার এলাকার প্রদীপ তৈরির মৃৎশিল্পী ভানু চরণ বেরা, ঝারগ্রামের বিনপুর এলাকার কেশদা গ্রামের শঙ্কর পালরা বলেন,
“করোনা পরিস্থিতির জন্য সারা বছর বিক্রি-বাট্টা নেই। কঠিন পরিস্থিতি আমাদের মতো গরিব মৃৎশিল্পীদের। দীপাবলিতে এবার চিনাবাতির প্রভাব কিছুটা কমতে পারে বলে মনে হচ্ছে। তাই মাটির প্রদীপের ব্যবসায় কিছুটা আলোর মুখ দেখতে পাচ্ছি।
বেলদার মাটির প্রদীপের আরেক কারিগর সুবল বেরা জানান, এই ব্যবসা আমরা চার পুরুষ থেকেই করছি। হাঁড়ি, কলসি, ঘট, প্রদীপ, সরা, ফুলের টব, তুবড়ির খোল ইত্যাদি মাটির জিনিস সারাবছর ধরে তৈরী করি। এবছর করোনা পরিস্থিতির জন্য গত কয়েক মাস একেবারেই রোজগার হয়নি। তবে এবার ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা থাকায় ভারতে চীনা দ্রব্য বাতিলের ফলে সামনের দীপাবলিতে মাটির প্রদীপের চাহিদা অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করছি। তাই এখন বেশি পরিমাণ মাটির প্রদীপ তৈরি করছি। আশা করছি এবার কিছুটা হলেও এই ব্যবসায় লাভের মুখ দেখতে পাব।