আমাদের ভারত, ২৭ এপ্রিল : দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ হাজার। সঠিক সময় লকডাউন না করলে এই সংখ্যা দুলাখ হতো বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ৩মে শেষ হবে দ্বিতীয় দফার লকডাউন। তারপর আবারোও কি লক ডাউনের মেয়াদ বাড়বে? কেন্দ্র সরকারের সিদ্ধান্ত এখনো জানা যায়নি। তবে লকডাউন থাকাকালীনই যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে লকডাউন শেষ হবার পরে পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে তা নিয়ে একাধিক মত রয়েছে।তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আগেই জানিয়েছে মে মাসের মাঝামাঝি আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছাতে পারে। তারপর এই সংখ্যা কমতে শুরু করবে।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের ডিরেক্টর ডক্টর সুজিত কুমার জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমনের দ্বিগুন হবার সময়ে লকডাউনের প্রভাব পড়েছে। ২১শে মার্চ লকডাউন শুরু হবার সময় আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়া অর্থাৎ ডবলিং রেট ছিল তিন দিন। লকডাউনের পর তা ধীরে ধীরে বেড়ে হয়েছে ৮.৬ দিন। সম্প্রতি তা হয়েছে ১০ দিনের কাছাকাছি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর পরিসংখ্যান বলছে মে মাসের পর থেকে করোনা আক্রান্তের দ্বিগুণ হওয়ার সময় কমবে। পজিটিভ কেসের সংখ্যা কম দিনে দ্বিগুণের বেশি হবে। অর্থাৎ যে হারে সংখ্যা বাড়ছে সে অনুযায়ী হিসেব করলে আগামী ১৫ মে এর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছতে পারে প্রায় ৬৫ হাজারে। তখন ডাবলিংয়ের রেট দাঁড়াবে ১৫ দিনের কাছাকাছি।
তবে ১৫মে এর পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছবে। আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে আরো কম সময় লাগবে ১৫মে থেকে ৩১ মে, এই সময়টাতে।
অঙ্কের হিসেবে অনুযায়ী ফের ১৫ জুন পর্যন্ত ১২ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা এক ধাক্কায় পৌঁছাবে ৩লক্ষ ৯৫ হাজারে। ১৫ জুনের পর ডাবলিং হবে ১০দিনে। জুন জুলাই আগস্ট মাসে আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড করতে পারে। হিসেব বলছে ১৫ আগস্টের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দু’কোটি সীমা পেরোতে পারে। আক্রান্তের সংখ্যা হতে পারে দু কোটি ৭৪লক্ষ। সেই হিসেবে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াবে ১ লক্ষ। তবে এটা সবটাই অঙ্কের হিসেব।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিল এই মুহূর্তে ভারতের আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে, তার কারণ অবশ্যই টেস্টিং। বেশি সংখ্যায় টেস্ট হচ্ছে বলে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে বেশি। অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে এখন ভারতে আক্রান্ত বৃদ্ধির হার বেশি। যে সময় লন্ডন ঘোষণা করা হয়েছিল সে সময় ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০০। প্রতিদিন আক্রান্ত বারছিল ২১.৬ শতাংশ হারে। এখন সেটা কমে হয়েছে ৮.১ শতাংশ হারে।
এই হারে যদি ভারতের আক্রান্তের বৃদ্ধির হার চলতে থাকে তাহলে আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা ৪০ হাজারের কাছাকাছি চলে যেতে পারে। মে মাসের মাঝামাঝি ৭০ হাজার ও আগস্ট মাসের মাঝে গিয়ে সেটা দাঁড়াবে ২কোটি।
তবে করোনা মোকাবিলায় বেশকিছু রাজ্যের সাফল্য চোখে পড়ার মতো। আর সেই জন্যই দেশের গড় আক্রান্ত বৃদ্ধির হার আগামীদিনে কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বর্তমানে এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমনের যে হার দেখা যাচ্ছে তার ওপর অংক কষে বের করা হচ্ছে ভবিষ্যতের পরিসংখ্যান। সাধারণত এই ধরনের অংক কষা হয় সংক্রমণ মোকাবিলার আগাম ব্যবস্থা রাখার জন্য। এটা বাস্তব হবে এমন নয়। তবে দুর্ভাগ্যবশত যদি বাস্তব হয়ে ওঠে তাহলে সরকারের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকে। তবে এই হিসেব মিলবে কিনা তা নির্ভর করবে লকডাউনের প্রভাব, পরবর্তী পরিস্থিতি ও সুনির্দিষ্ট ভাবে মেনে চলা কিছু বিষয়ের উপর।