“উন্নয়নের প্রশ্নে রাজনীতি নয়,” বালুরঘাটে রেলের সরকারি অনুষ্ঠানে মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বার্তা সুকান্তর, জোর চর্চা রাজ্য রাজনীতিতে

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১১ মে: উন্নয়নের প্রশ্নে রাজনীতি নয়, রেলের সরকারি অনুষ্ঠানে মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ইতিবাচক বার্তা সুকান্ত মজুমদারের। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনা রীতিমতো তাক লাগিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। অবাক হয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের মানুষও। এদিন দুপুরে বালুরঘাট স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ চালিত রেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছিল। যার উদ্বোধক হিসাবে সাংসদ সুকান্ত মজুমদার থাকলেও বিশেষ অতিথি হিসেবে রাখা হয়েছিল তপনের বিজেপি বিধায়ক বুধরাই টুডু ও হরিরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে। যে অনুষ্ঠানে মন্ত্রী উপস্থিত না হলেও জোর চর্চা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। যদিও সুকান্তর দাবি, রাজনীতির ঊর্দ্ধে উন্নয়ন, যে কারণেই রেল দপ্তর মাননীয় মন্ত্রীকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

স্বাধীনতার ৫০ বছরেরও বেশি সময় পরে রেলে চড়বার স্বাদ পূরণ হয়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মানুষের। যার পরে পরিকাঠামোগত কারণে ধুকছিল জেলার রেল ব্যবস্থা। পর্যাপ্ত বরাদ্দের অভাবে বন্ধ হয়ে পড়েছিল জেলার একাধিক রেল পরিকল্পনা। শুধু তাই নয়, মালদা স্টেশনে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা রেলের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা এই জেলার মানুষের কাছে যেন একটা অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেইসব থেকে এই জেলার মানুষকে মুক্তি দিতে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। যার অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে এদিন এই বিদ্যুৎ চালিত ট্রেনের উদ্বোধন বলে জানিয়েছেন সাংসদ। যার মাধ্যমে শুধু সময়ের সাশ্রয়ই নয়, বিভিন্ন স্টেশনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকবার যে ভোগান্তি তা থেকেও সাধারণ মানুষের মুক্তি মিলবে বলে জানিয়েছেন এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা উত্তর পূর্ব রেলওয়ের ডি আর এম শুভেন্দু চৌধুরী।

এদিন দুপুরে বালুরঘাট রেল স্টেশনে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। সবুজ পতাকা নাড়িয়ে শিলিগুড়ি গামী বিদ্যুৎচালিত ওই ট্রেনের শুভারম্ভ করা হয় এদিন। যে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে তপনের বিজেপি বিধায়ক বুধরাই টুডু ও হরিরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের নাম থাকলেও কোনো বিশেষ কারণে উপস্থিত হননি মন্ত্রী। রেলের সরকারি অনুষ্ঠানপত্রে মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের নাম দেখে অনেকেই চমকে গিয়েছেন এদিন। যা রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমতো দৃষ্টান্তমূলক বলেই মনে করছেন অনেকে। যদিও এটা স্বাভাবিক ব্যাপার বলেই দাবি বালুরঘাটের সাংসদের। তিনি বলেন, উন্নয়নের প্রশ্নে রাজনীতি নয়।

সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, উন্নয়ন আর রাজনীতি দুটো আলাদা বিষয়। রাজনীতির ঊর্দ্ধে গিয়ে মানুষের জন্য উন্নয়ন করা প্র‍য়োজন। জেলার মানুষের সুবিধার্থে চালু হওয়া এই বিদ্যুৎ চালিত ট্রেনে প্রভূত উপকৃত হবে সাধারণ মানুষ। যে উন্নয়নে সামিল হতেই রেল দপ্তর জেলার মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কিন্তু কোনো বিশেষ কারণে হয়তো তিনি উপস্থিত হতে পারেননি।

ডিআরএম শুভেন্দু চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ চালিত এই ট্রেনের গতি বেশি থাকবার কারণে সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন স্টেশনে যে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হতো তারও মুক্তি মিলবে এই জেলার মানুষের। বালুরঘাট থেকে বিভিন্ন রুটে চলা সমস্ত ট্রেন এখন বিদ্যুতেই চলবে।

এদিন স্টেশনে আসা পুলক কান্তি দাস সহ বেশকিছু বাসিন্দারা বলেন, সাংসদের এই অভূতপূর্ব উদ্যোগকে তারা স্বাদুবাদ জানান। রেলের উন্নয়ন মানেই সাধারণ মানুষের উন্নয়ন। উন্নয়নের প্রশ্নে রাজনীতির ঊর্দ্ধে উঠে সকলকে একত্রিত হওয়ার যে বার্তা সুকান্ত দিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আগামীতে রাজ্যের শাসক দলের তরফেও এমন উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *