আমাদের ভারত, ৫ সেপ্টেম্বর: ঘরে শোয়ানো মেয়ের নিথর দেহ, রান্নাঘরের পাশে ছোট ঘরে ডেকে ডিসি নর্থ টাকা দিতে চেয়েছিলেন। বুধবার রাতে আরজিকরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই বিস্ফোরক দাবি করেছেন তিলোত্তমার বাবা। এই ভয়ঙ্কর অভিযোগ সামনে আসতেই একটি পাল্টা ভিডিও তৃণমূলের তরফে পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায়, তিলোত্তমার বাবা- মা পুলিশের তরফে টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করছে। কিন্তু কেন দু’রকম বয়ান? প্রশ্নের উত্তরে তিলোত্তমার বাবা- মায়ের দাবি, পুলিশের চাপে আগে ওই কথা তারা বলতে বাধ্য হয়েছিলেন।
তরুণী চিকিৎসকের ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখে যখন বাবা-মা দিশেহারা, তখন টাকা অফার করেছিল পুলিশ। তিলোত্তোমার বাবার এই বক্তব্যে যখন নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই বৃহস্পতিবার সকালে তিলোত্তোমার বাবা- মায়ের একটি ভিডিও সামনে আনে তৃণমূল। সেই ভিডিওর সঙ্গে বুধবার রাতের বক্তব্যের মিল নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তারপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে তাহলে কোনটা সত্যি? পুলিশ যে টাকা দিতে চেয়েছিল এই দাবি প্রথমবার নির্যাতিতার বাবা করলেও ৯ আগস্টের পর অনেকেই এই কথা বলেছেন। ডঃ সুবর্ণ গোস্বামী সহ কয়েকজন চিকিৎসক নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে বলেছিলেন পুলিশ টাকা দিতে চেয়েছিল। বুধবার নিজের মুখে একথা বলেন তিলোত্তমার বাবা।
এরপর বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি আমাদের ভারত। সেখানে দেখা যাচ্ছে নির্যাতিতার বাবা- মাকে কেউ প্রশ্ন করছেন, আপনারা নাকি বলেছেন, পুলিশ টাকা দিতে চাইছে? উত্তরে নির্যাতিতার বাবা বলেছেন কে বলল? আমরা এরকম কিছু বলিনি। কিভাবে বলল এরকম কিছু ঘটেইনি। প্রশ্ন করা হয় ছিঃ ছিঃ তাহলে এটা মিথ্যে গল্প? তিলোত্তমার বাবা মা বলছেন, একদম মিথ্যে বানানো গল্প।
এই ভিডিওটির অর্থ হলো নির্যাতিতার বাবা- মাকে টাকা দেওয়া হয়নি। কুণাল ঘোষ থেকে দেবাংশু সকলেই এই ভিডিও পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই তিলোত্তমার মা- বাবার সঙ্গে কথা বলেন সংবাদ মাধ্যম। প্রশ্ন করা হয়, তাহলে আসল সত্যি কোনটা? তিলোত্তমার বাবা বলেছেন, সেদিন রাতে ভিডিও করে নিয়ে গিয়েছিল যে, আমরা কিছু বলিনি। এটা না বলতে চাপ দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ চাপ দিয়েছিল। বোঝানো হয়েছিল, পুলিশের বিরুদ্ধে কথা বললে তদন্তে অসুবিধা হবে। তদন্তে ক্ষতি হবে। তখনও তো কেসটা পুলিশের হাতেই ছিল। পুলিশ তদন্ত করবে, আবার পুলিশের নামেই বদনাম করব? কিন্তু রাজনৈতিক দলের কাছে ভিডিও কী করে গেল সেটা জানেন না বলে জানান নির্যাতিতার বাবা।
তারপর কী হলো? তিলোত্তমার বাবা-মায়ের বক্তব্য, পরে পুলিশের গতিবিধি দেখে বুঝলাম ব্যাপারটা ওরা অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর হাইকোর্ট সিবিআই’কে তদন্তভার দিল।