পটাশপুরে আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিক্ষোভ ঘিরে পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ, রণক্ষেত্র এলাকা

আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ৩ জুলাই: আমফান ঝড়ে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে আর সরকারি টাকা ঢুকেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মী-সমর্থকের ব্যাংক একাউন্টে। যাদের আদৌ কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এই ঝড়ে। গ্রাম পঞ্চায়েত ও বিডিও অফিসে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। প্রকৃতই যাদের ক্ষতি হয়েছে তারা বঞ্চিতই থেকে গেছেন। এমনই অভিযোগ তুলে শুক্রবার সকালে পথ অবরোধ শুরু করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর দু’নম্বর ব্লকের কয়েক হাজার মানুষ। এগরা বাজকুল রাজ্য সড়কের পটাশপুরে সকাল থেকে শুরু হয় অবরোধ। অবরোধ তুলতে এলে পুলিশ ও জনতার মধ্যে বাকযুদ্ধ বেধে যায়।

প্রথমে পিছু হঠে পুলিশ। কিছু সময় পর বিশাল বাহিনী নিয়ে অবরোধ তুলতে আসে পটাশপুর থানার পুলিশ। তাতেও অবরোধকারীরা অবরোধ তুলতে অস্বীকার করে। তারপর ঘটনাস্থলে আসেন পটাশপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চন্দন সাউ। তৃণমূল নেতা চন্দন সাউকে হাতের কাছে পেয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠে উপস্থিত জনতা। পুলিশ ও তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গালিগালাজ দিতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। অবরোধ তোলার পরিবর্তে মারমুখী হয়ে ওঠে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশ ও জনতা খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। মারতে উদ্যত হয় তৃণমূল নেতাকে। উত্তেজিত জনতা ভাঙ্গচুর চালানো শুরু করে অবরোধে আটকে পড়া যানবাহনে। শুরু হয় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশ ও জনতার মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় পটাশপুর। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ শূণ্যে গুলি চালায় বলেও অভিযোগ উঠেছে। এভাবে বেশ কয়েক ঘণ্টা কাটার পর শেষমেষ পার্শ্ববর্তী থানাগুলি থেকে আরো পুলিশ বাহিনী আসে। তারপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অবরোধকারীদের হঠানো সম্ভব হয়। অবরোধ উঠে যায়। ঘটনায় দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন কমবেশি আহত হন।

গতকাল বৃহস্পতিবার পটাশপুর ২ নম্বর ব্লকে এই আমফান দুর্নীতি নিয়ে বিজেপির ডেপুটেশন ঘিরে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী। আর আজ পুনরায় সেই পটাশপুরে আমফান দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে পুলিশ জনতা যুদ্ধ।

খেজুরি, নন্দীগ্রাম, ভগবানপুর, পটাশপুরে
আমফান দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একের পর এক ব্লক এলাকায় বিক্ষোভের ঘটনা শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে আগামী নির্বাচনে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে ফেলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *