আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ৬ জানুয়ারি: পরিকাঠামো গত সমস্যায় ধুঁকছে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ থানা। কিশোরীর নৃশংস খুনের ঘটনা নিয়ে পুলিশের ব্যর্থতা ঢাকতে সাংসদকে স্বীকারোক্তি দিলেন এক পুলিশ আধিকারিক। সোমবার বিকেলে কুমারগঞ্জে ছাত্রী খুনের নারকীয় ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পুলিশকে ২৪ ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সাংসদের আন্দলনে নামার হুঁশিয়ারিতেই তুলে ধরলেন থানার দুর্বল পরিকাঠামোর চিত্র।
এদিন ঘটনার খবর পেতেই এলাকায় ছুটে যান সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। কুমারগঞ্জ থানায় গেলেও জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত কেন ঘটনাস্থলে পৌঁছাননি তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাংসদ। এদিন থানায় বসে ঘটনা নিয়ে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বল দিক তুলে ধরে ঘটনার জববদিহি করেন সুকান্ত বাবু। যার পরেই কিছুটা দায় এড়িয়ে পরিকাঠামগত অভাবের কথা সাংসদের কাছে স্বীকার করেন ডিএসপি (ডিএনটি) বিনোদ তামাং।
এদিন সাংসদের নেতৃত্বে প্রায় পঞ্চাশজন বিজেপির নেতাকর্মীরাও হাজির হয়েছিলেন কুমারগঞ্জ থানায়। তাঁদের দাবি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে পুলিশ শাস্তির ব্যবস্থা করতে না পারলে থানা ঘেরাও করে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভে বসবেন বিজেপির নেতা কর্মীরা।
সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, এমন নৃশংস ঘটনা শুনেও এলাকায় পৌঁছাননি জেলা পুলিশ সুপার। একই সাথে নিয়মিত পেট্রোলিং হচ্ছে কি না তা নিয়েও পুলিশকে জিজ্ঞাসা করতেই পুলিশ তাদের দুর্বল পরিকাঠামোকে সামনে এনে দায় এড়াতে চেয়েছেন। নীল সাদা রঙ করে থানাগুলির দুর্বলতা ঢাকা হয়েছে এজেলায়। ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই ঘটনার কিনারা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।
জানা যায়, গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা ওই কিশোরীকে ফুসলিয়ে প্রথমে একটি জলসা এবং তারপরেই কুমারগঞ্জের ওই নির্জন জায়গায় আনা হয়েছিল। অশোকগ্রাম এলাকায় পুলিশি মদতে বেশ কয়েকদিন ধরে জলসার আড়ালে জমে উঠেছিল রমরমিয়ে জুয়ার আসর। যেখানেই রবিবার রাতে কয়েকজন যুবকের সাথে দেখা গিয়েছিল ওই কিশোরীকে বলে স্থানীয় সুত্রের খবর। জলসার আসর থেকে সামান্য দূরে বেলখোর পাকুরতলা এলাকায় একটি কালভার্টের নীচে হিউম পাইপের ভেতরে পুড়ে যাওয়া ওই কিশোরীর দেহাংশ সোমবার সকালে উদ্ধার হতেই প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশ প্রশাসন। কালভার্টের উপর প্রচুর রক্ত দেখে বোঝা যায় ধারালো অস্ত্রদিয়ে খুন করা হয়েছে ওই কিশোরীকে। যার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। শরীরের বেশীরভাগ অংশ পুড়ে যাওয়ায় প্রথমে তাকে চিহ্নিত করা না গেলেও পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করেছেন। রাতভর ওই এলাকায় এমন ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোথায় ছিল এদিন এলাকায় গিয়ে সেই প্রশ্ন তোলেন বালুরঘাটের সাংসদ। ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশকে ২৪ ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে আন্দোলনে নামার হুশিয়ারি দিয়েছেন সাংসদ।