আমাদের ভারত, আসানসোল, ১৪ এপ্রিল: গুজবের জেরে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিল জামুড়িয়ার চুরুলিয়া। মঙ্গলবার এই ঘটনায় জনতা পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে ব্যাপক বোমাবাজি ও ইট, পাথর বৃষ্টিতে ছয় জন পুলিশকর্মী গুরুতরভাবে আহত হয়েছে। ভাঙ্গা হয় পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি। যদিও পুলিশের তরফে আহতের সংখ্যা জানা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে জামুড়িয়া থানার চুরুলিয়া ফাঁড়ির আই.সি কার্তিক ভুঁই দুজন সিপিভিএফকে নিয়ে চুরুলিয়ার নজরুল একাডেমী লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গ যুব কল্যাণ দপ্তরের যুব আবাসে পৌঁছলে এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দারা হঠাৎ তাদের ওপর চড়াও হয়ে ধেয়ে আসে। তাদের অভিযোগ, ওই এলাকার একটা যুব আবাসে এলাকায় করোনা আক্রান্তদের পরীক্ষা করার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে বলে তারা মানুষের মুখে শুনেছিলেন।
এছাড়া পুলিশ প্রশাসন অন্যায় ভাবে বহিরাগতদের ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাতের অন্ধকারে নিয়ে আসছে। কেন তারা ওই যুব আবাসে বহিরাগতদের থাকবার অনুমতি দিয়েছেন, এর জেরে গ্রামের মধ্যে মারণ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে এই আশঙ্কাতেই পুলিশের বিরুদ্ধে তারা সরব হয়।
এদিকে অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ গাড়ির চালক সিপিভিএফ কর্মী ও পুলিশ আধিকারিক এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপরেই উত্তেজিত গ্রামবাসীরা পুলিশের গাড়ির ওপর হামলা চালিয়ে ভেঙ্গে ফেলে। এই ঘটনার খবর জামুরিয়া থানায় পৌঁছানোর পরপরই জামুরিয়া থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় জামুরিয়া থানার ওসি সুব্রত ঘোষ। ওসি গ্রামবাসীদের বোঝাতে গেলে তার ওপর চড়াও হয় বেশ কিছু গ্রামবাসী। প্রথমে বচসা পরে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। মুহূর্তে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। গ্রামবাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ও পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। ধ্বস্তাধস্তিতে ওসি সুব্রত ঘোষ পড়ে গেলে তার ওপর লোহার রড ও পাথর দিয়ে হামলা চালায় কয়েকজন গ্রামবাসী। এই ঘটনায় গুরুতর ভাবে আহত ওসিকে বাঁচাতে এসে প্রায় ৬ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাও ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ।
পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আসানসোল, রানীগঞ্জ, দুর্গাপুর, অন্ডাল এলাকা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।