আমাদের ভারত, কলকাতা, ৩ সেপ্টেম্বর:
আত্মরক্ষার জন্য বাড়িতে নারকেল গাছ লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছে হিন্দু সংহতি। শুধু তাই নয়, এই নারকেল গাছ লাগানো থেকে বড় করে তোলা এবং তারপর নারকেল পেড়ে খাওয়া– গোটা পদ্ধতি যেভাবে শেখানো হয়েছে, তাতে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। নারকেল গাছ লাগানোর আড়ালে অন্য কোনও পরামর্শ দিচ্ছেন কি হিন্দু সংহতির সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য? কারণ সামাজিক মাধ্যমে তার যে লেখা ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেটা দেখে এই কথা মনে হওয়াই স্বাভাবিক। দেবতনু ভট্টাচার্যের বয়ানে সামাজিক মাধ্যমে নারকেল গাছ লাগানোর যে পরামর্শটি ঘুরে বেড়াচ্ছে তা এইরকম:
“নারকেল হিন্দুদের সমস্ত ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের একটি অপরিহার্য অঙ্গ। পুজোর সময় জলপূর্ণ ঘটের ওপর নারকেল স্থাপন করা হয়। এটি মঙ্গল গ্রহের প্রতীক। ঈশ্বরের কাছে নারকেল উৎসর্গ করা হয়। তাই ধার্মিক হিন্দু হয়ে বেঁচে থাকতে হলে বাড়িতে #নারকেল_গাছ 🌴 লাগানো প্রত্যেক হিন্দুর অবশ্য কর্তব্য।”
নারকেল গাছ লাগাতে হলে প্রথমেই মাটিতে একটা গর্ত করতে হবে। তার জন্য দরকার হবে শাবল অথবা লোহার রড। যদি শাবল বাড়িতে না থাকে তা হলে কিনে আনার পরামর্শ দিয়েছেন। পাশের বাড়ি থেকে ধার করতে নিষেধ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাড়িতে একাধিক শাবল রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ এই শাবল, শুধুমাত্র মাটিতে গর্ত করা নয়, প্রয়োজনে সাপখোপ মারতেও কাজে লাগবে। নারকেল চারা লাগানোর পর এবার তার পরিচর্চা কী ভাবে করা হবে তার পরামর্শ দিতে গিয়ে দেবতনুবাবু বলেছেন, “গাছ বড় হলেই ডালপালা ছাঁটাতে হবে। তারজন্য একটু লম্বা দেখে কয়েকটা কাটারি এনে বাড়িতে রাখুন, মাঝে মাঝে ধার দিন। নিজে ব্যবহার করুন, পরিবারের অন্য সদস্যদের ব্যবহার করতে শেখান।” এই হচ্ছে গাছের পরিচর্চা করার পদ্ধতি, যা শেখাচ্ছেন হিন্দু সংহতির সভাপতি।
তৃতীয় ধাপের পরামর্শ:
“এরপরে ডাব ধরবে। ডাবের জল স্বাস্থ্যকর। কিন্তু ডাবের জল খেতে হলে হাঁসুয়া বা কাস্তে দরকার হবে– কিনে নিন। শুধুমাত্র ডাব কাটতে নয়, আগাছা নির্মূল করার কাজেও লাগবে।”
নারকেল গাছ বাঁচানোর জন্য চতুর্থ ধাপে তীরধনুক রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন হিন্দু সংহতির সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য। তবে, পাখি মারার বন্দুক রাখার কথা কেন বলেননি তা বোঝা গেল না। দেবতনুবাবু বলেছেন, “গাছে নারকেল ধরলেই বাঁদরের উৎপাত শুরু হবে। এদের সামলানোর জন্য তীরধনুক রাখুন। কয়েকটা গুলতি এবং প্রচুর ছোট পাথর জমা করে রাখুন। বাড়ির ছাদে বোল্ডার পাথর জমিয়ে রাখুন। বাঁদরদের শায়েস্তা করার জন্য এগুলো খুবই উপযোগী।
এছাড়া, চাষের জমি দিয়ে যাতায়াত করলে, সাপের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। তাই বাড়িতে কয়েকটা শক্তপোক্ত লাঠি রাখুন।”
“গ্রামে গ্রামে হিন্দুদের বাড়িতে বাড়িতে এইভাবে নারকেল গাছ লাগানো, তার রক্ষণাবেক্ষণের সমস্ত ব্যবস্থা করতে না পারলে হিন্দু হয়ে বাঁচতে পারবেন? হিন্দু হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচতে হলে নিজে গাছ লাগান এবং নারকেল গাছ লাগানোর উপযোগিতার কথা আত্মীয় পরিজন, বন্ধু বান্ধবদের বোঝান এবং তাদের বাড়িতেও যাতে নারকেল গাছ লাগানোর ব্যবস্থা হয়, তা সুনিশ্চিত করুন। এই মুহূর্তে হয়তো আপনি নারকেল গাছ লাগাতে পারছেন না, কিন্তু ভবিষ্যতে লাগানোর পরিকল্পনা অবশ্যই করুন এবং এখনই গাছ লাগানোর সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।”