আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১৪ জানুয়ারি: জঙ্গলে বেড়াতে এসেছেন বলে কি পৌষ সংক্রান্তির পিঠে খাওয়া হবে না? নলেন গুড়ের পায়েস, মালপোয়া, পাটিসাপটা, দুধপুলি, মুগপুলি দিয়ে সাজানো হল পর্যটকদের জন্য সকালের প্রাতরাসের প্লেট। রাজ্য পর্যটন নিগমের মাদারিহাট আরণ্যক ট্যুরিস্ট লজে এমনই ছবি ধরা পরলো বৃহস্পতিবার সকালে। আর শীতের ঘন কুয়াশার মাঝে পৌষ সংক্রান্তির সকালে এমন আয়োজনে বেজায় খুশি পর্যটকের দল। বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে বেড়াতে এসেও সংক্রান্তির দিনে এমন আয়োজন হবে তাদের জন্য এমনটা কল্পনাতেও ছিল না পর্যটকদের।
একদিকে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে ঘুরে বেড়ানো, অন্যদিকে পৌষের পিঠেপুলি পাওয়ায় বেড়ানোর মজা বেশ ভালভাবেই উপভোগ করেছেন ট্যুরিস্ট লজের আবাসিক পর্যটকরা। মাঝে কোভিডের আবহে একেবারেই থমকে গিয়েছিল ডুয়ার্সের পর্যটন। সেই আতঙ্ক খানিকটা কমেছে। আসছেন পর্যটকরা। স্বাভাবিকভাবেই সরকারি বেসরকারি লজ রিসর্টে অতিথিদের মন কাড়তে মাঝে মাঝেই নেওয়া হচ্ছে অভিনব পরিকল্পনা। মাদারিহাট ট্যুরিস্ট লজেও তেমনই পরিকল্পনা নেওয়া হয়। লজের রান্নার সাথে জড়িতরাও বিশেষভাবে প্রতিটি পদ নিজেদের মত করেই শিখে নিয়েছিলেন। এদিন সকাল সকাল তা পরিবেশন করা হয়। রাজ্য পর্যটন নিগমের ওই পিঠে-পুলি উৎসবের আয়োজন বলে দাবি মাদারিহাটের আরণ্যক পর্যটন বাংলোর ম্যানেজার নিরঞ্জন সাহার। তিনি জানান, “আপামর বাঙালির অন্যতম সেরা উৎসব হল পৌষ পার্বণ।ওই সময়ে আমাদের কাছে বেড়াতে আসা পর্যটকরা যাতে ঘরের বাইরে এসেও ঘরে বসে পিঠে-পুলিতে মজার অবকাশ পান, সেই উদ্দেশ্যেই আমাদের এই আয়োজন।”
সুন্দরবন থেকে ডুয়ার্সে বেড়াতে আসা পর্যটক শুভেন্দু মাইতি জানালেন “মকর সংক্রান্তির নিয়ম মানতে সঙ্গে খানিকটা নলেন গুড় এনেছিলাম। কিন্তু এখানে আমাদের যেভাবে সাবেকি প্রথায় দেদার পিঠে-পুলির আয়োজনে আপ্যায়ন করা হয়েছে তা এক কথায় অসাধারণ।”
অন্যদিকে এখন শহরের ব্যাস্ততার মাঝে পিঠে-পুলি বানানোর রীতি যখন প্রায় শেষ হতে চলেছে তখন আলিপুরদুয়ারের একটি সংগঠনের উদ্যোগে আলিপুরদুয়ায়র কোর্ট মোরে অনুষ্ঠিত হল পিঠে-পুলি উৎসব। শহরের একঝাঁক নবীন্দের সাথে টেক্কা দিয়ে এই উৎসবে মাতলেন প্রবীনরাও।পর পর আকর্ষনীয় করে হরেক রকম পিঠে দিয়ে সাজানো হয়েছে একাধিক টেবিল। একইসাথে তৈরী পিঠে-পায়েশ থেকে তিলখাজা সবই বিক্রির ব্যাবস্থা করে দেওয়া হয় সংগঠনের তরফে। আর সেখানেই দেদারে পিঠে-পুলি বিক্রি করলেন বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যারা।