জয় লাহা, দুর্গাপুর, ৩০ নভেম্বর: দিনে দুপুরে সাইকেল চুরি। তাও আবার সরকারি কর্মীদের আবাসনে। আর তাতেই বড়সড় প্রশ্ন উঠল শহরের সরকারি কর্মীদের আবাসনের সুরক্ষা ব্যাবস্থায়। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুর শিল্পশহরের প্রাণকেন্দ্র সিটিসেন্টার স্টাফ কোয়াটারে।
সিটিসেন্টারে রয়েছে রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা রিটেল হাউসিং এস্টেট (পিএইচই) কোয়াটার। এ, বি, সি ও ডি টাইপের পাশাপাশি এলআইজি, এমআইজি ও মহিলাদের পৃথক আবাসন রয়েছে। মূলত সরকারি কর্মচারীদের থাকার জন্য এই আবাসনগুলি। বেশীরভাগই তিনতলার। সব মিলিয়ে প্রায় সংখ্যাটা সাড়ে ৪০০ হবে। আবাসানগুলির কোনো কোনো প্রান্তে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। চারদিকে যাওয়া আসার পাকা রাস্তা। রাস্তার দু’পাশে সাজানো আবাসনগুলি। আর এই আবাসনে এখন দিন দুপুরে চোরেদের দৌরাত্মে আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
প্রশ্ন আতঙ্কটা কি? ওই আবাসনের ডি টাইপে ৯/৫ কোয়াটারের বাসিন্দা বিরেন্দ্রনাথ আচার্য রাজ্য সরকাি কর্মী। স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে তিনতলায় থাকেন। নীচে সিঁড়ির রুমে সাইকেল, মোটরসাইকেল থাকে। মঙ্গলবার দুপুরে তার ছেলের রেঞ্জার সাইকেলটি বেমালুম গায়েব হয়ে যায় বলে অভিযোগ। বিরেন্দ্রনাথ বাবু বলেন, “মঙ্গলবার সকালে ডিউটি যাওয়ার সময় দেখেছি সাইকেলটা ছিল। সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফিরে আসলাম, তখন দেখি সাইকেল নেই। চারদিকে খোঁজাখুজি করলাম। কোনো হদিশ পেলাম না। তারপর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়।” তিনি বলেন, “সরকারি কর্মীদের আবাসন থেকে এভাবে চুরির ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আমরা আতঙ্কিত। নিরাপত্তার অভাববোধ করছি। আজ সাইকেল চুরি গেছে, আগামীদিনে হয়তো দরজা ভেঙ্গে বাড়ির জিনিসও যেতে পারে। তাই পুলিশ টহলের পাশাপাশি আবসনের প্রবেশ দ্বারে নিরাপত্তারক্ষী সিসিটিভি বসানোর আবেদন রাখছি।”
তার কয়েকটা বিল্ডিংয়ের পাশে অমিতাভ দাস থাকেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী এবং তাঁর স্ত্রী রাজ্য সরকারি কর্মী। অমিতাভবাবু জানান, “গত রবিবার সিড়ির নীচে রাখা ছিল মেয়ের সাইকেল। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ছিল। বিকাল নাগাদ দেখি সাইকেল উধাও। পুলিশে জানিয়েছি। এভাবে পর পর চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত।” একইরকমভাবে ওই এলাকায় আরও দুটি কোয়াটার থেকে সাইকেল চুরি গেছে বলে অভিযোগ। এতো গেল স্টাফ কোয়াটারের ঘটনা। গত রবিবার সিটিসেন্টার ধ্যানচাঁদ সরণীতে সুবোধ চট্টোপধ্যায়ের বাড়ির গ্যারেজ থেকে একইরকমভাবে দুপুরে সাইকেল চুরি হয় তার ভাড়াটিয়ার। এক সপ্তাহে পাঁচটি সাইকেল চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ। আর সবক’টি দুপুর ১ টা থেকে বিকাল ৩ টার মধ্যে।আর তাতে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে শহরের প্রাণকেন্দ্রে আবাসনের নিরাপত্তায়। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, “ঘটনার তদন্ত চলছে।”