ফের হাতির উপদ্রবে আতঙ্ক বাঁকুড়ার গ্ৰামাঞ্চলে

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৪ আগস্ট: ফের হাতির উপদ্রব শুরু হওয়ায় জীবন হানি সহ বড় রকম ক্ষতির আশঙ্কায় আশঙ্কিত বাঁকুড়ার হাতি উপদ্রুত এলাকার মানুষ। বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের বড়জোড়া, বেলিয়াতোড় ও গঙ্গাজলঘাঁটি রেঞ্জ এলাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে হাতির তান্ডব চলতে থাকায় হাতি উপদ্রুত গ্রাম গুলির বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। বন দফতরের প্রতি বেজায় ক্ষুব্ধ তারা। রোজ রাতে কোনো না কোনো গ্রামের গৃহস্থ বাড়িতে ঢুকে হামলা করছে আবাসিক দাঁতাল হাতি গুলি। এই মুহূর্তে এই তিন রেঞ্জ এলাকায় ৪/৫ টি আবাসিক হাতি রয়েছে বলে গ্ৰামবাসীদের ধারনা।

মঙ্গলবার রাতে গঙ্গাজলঘাঁটি রেঞ্জের পিঁড়রাবনী গ্রামের বাজারে ঢুকে উপদ্রব চালিয়েছে হাতি। প্রথমে হিমাংশু চৌধুরী নামে এক ব্যবসায়ীর কাপড়ের দোকানের সাটার ভেঙ্গে ঢুকে হাতিটি খাবার বা ব্যবহার করার মত কোনো জিনিস না পেয়ে দোকানের কাঁচের সোকেশ ভাঙ্গচুর করে বেরিয়ে আসে। জামা কাপড় শুঁড় দিয়ে টেনে নামিয়ে দেয়। তারপর একে একে আরো ৫ টি দোকানে ভাঙ্গচুর চালায়। বুধন রুইদাসের মুদিখানার দোকানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে বুনো হাতিটি। এই ঘটনার পর এলাকাবাসীরা আশঙ্কিত। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।

জেলার হাতি সমস্যা নিয়ে গড়ে ওঠা সংগ্রামী গণ মঞ্চের জেলা সম্পাদক শুভ্রাংশু মুখার্জি বলেন, হাতির হামলা বন্ধ করতে অবিলম্বে হাতি গুলিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা না করলে জীবন শংসয়ের মত ভয়ঙ্কর পরিণতি অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, এবছর সময়ে বর্ষা না হওয়ায় চাষ প্রায় হয়নি বললেই চলে। তাই মাঠে ফসল নেই। হাতিরা এবার গ্রামে ঢুকে সবজি, বাজার, মুদিখানা ও গৃহস্থের বাড়িতে হামলে পড়ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে তাই দেখা যাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, জেলা বন দফতরই শুধু নয় রাজ্য বন মন্ত্রকের কাছেও বারবার আবেদন করা হয়েছে হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য অবিলম্বে ময়ূরঝর্না প্রকল্পের বাস্তব রূপায়ণ করা হোক। প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি। অথচ প্রতি বছর নিরীহ গরিব মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন, ঘরবাড়ি ভেঙ্গে বহু পরিবার অসহায় হয়ে রয়েছেন, কৃষক জমি চাষ করতে চাইছেন না।

বুধবার সকালে গঙ্গাজলঘাঁটি রেঞ্জ অফিস থেকে বনকর্মীরা গ্রামে গেলে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাদের। হাতি তাড়ানোর নামে বছর বছর লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হলেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর মেলেনি। গঙ্গাজলঘাঁটির রেঞ্জ অফিসের এক কর্তা আশ্বাস দিয়ে জানান নিয়মানুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *