স্বামীর অ্যাকাউন্টের আমফানের টাকা ২০০ জনকে ১০০ টাকা করে বিতরণ করলেন পঞ্চায়েত সদস্যা

স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ৮ জুলাই:
আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী হওয়ার জন্য তাঁর একাউন্টে ঢুকে ছিল কুড়ি হাজার টাকা। এই নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এবার সেই টাকা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিলেন পঞ্চায়েত সদস্য নিজেই। তবে, সরকারি টাকা এই ভাবে বিলি করা যায় কি না তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
নদিয়ার শান্তিপুর থানা এলাকার ঘটনা।

উল্লেখ্য, যারা আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাদেরকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে রাজ্য সরকারকে টাকা প্রদান করা হয়। সেইমতো রাজ্য সরকার প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে যারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা আর্থিক সাহায্য পায়নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে প্রতিটি পঞ্চায়েত এবং প্রধানের ঘনিষ্ঠরাই টাকা পেয়েছে। এর পরে বিভিন্ন জায়গায় পঞ্চায়েত অফিস থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতেও বিক্ষোভ দেখিয়েছে সাধারণ মানুষ। যার জেরে প্রশাসনের কাছে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে অনেকে।

সূত্রের খবর, ঠিক তেমনই নদিয়ার শান্তিপুর থানার বেলঘড়িয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোড়ালিয়া নরসিংহপুর গ্রামের বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য চন্দনা পাল। তার স্বামীর অ্যাকাউন্টে আমফানের টাকা ঢোকে। অভিযোগ, গ্রামবাসীদের চাপে তিনি বুধবার প্রায় ২০০ পরিবারকে ১০০ টাকা করে নিজের উদ্যোগেই দেন। প্রশ্ন উঠেছে সরকারি টাকা প্রশাসনকে না জানিয়ে কারো অনুমতি না নিয়ে কিভাবে তিনি বিতরণ করতে পারেন? এ বিষয়ে চন্দনা পাল বলেন, আমার আর কিছু উপায় ছিল না। আমার স্বামীর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে আমি নিজেই জানতাম না। যেহেতু স্বামীর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে তাই আমি সেই টাকা সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রায় ২০০ পরিবারকে ১০০ টাকা করে দিয়ে দিচ্ছি। এ বিষয়ে তিনি কারো কাছে অনুমতি নেননি তাও তিনি স্বীকার করেন।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিপুর ব্লকের বিডিও সুমন দেবনাথকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তবে আমরা ওই পঞ্চায়েত সদস্যাকে লিখিত নোটিশ পাঠিয়েছি। প্রশাসনের ফান্ডে ওই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তিনি যদি সাধারণ মানুষকে টাকা বিলি করে থাকেন সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু সরকারি টাকা প্রশাসনের ফান্ডে ফেরত দিতে হবে। যদি ফেরত না পাই তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ওই পঞ্চায়েত সদস্যার বিরুদ্ধে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *