আমাদের ভারত, ১ জুন: পাকিস্তানের দূতাবাসের দুই অধিকর্তাকে চরবৃত্তির অভিযোগে বহিষ্কার করেছে ভারত। কিন্তু এরপরেই সামনে এল আরও মারাত্মক তথ্য। জানা গেছে ভারতীয় রেলওয়েতেও রয়েছে পাক গুপ্তচরের জাল। এই অভিযোগে বেশ কয়েকজন রেলকর্মীকে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যেই সেনার গোয়েন্দা-বিভাগ, আইবি এবং স্পেশাল সেল ওই কর্মীদের উপর নজরদারি চালাচ্ছে।তিন থেকে চারজন রেলকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে।
পাক গুপ্তচরদের সঙ্গে এই রেল কর্মীদের ঠিক কতটা যোগাযোগ রয়েছে? কি কি নথি বা তথ্য লেনদেন হয়েছে,অথবা কতবার তাদের দেখা হয়েছে এই সবকিছুই এই সন্দেহভাজন রেল কর্মীদের থেকে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। জানা গেছে, সন্দেহভাজন রেলকর্মীরা রেলের মুভমেন্ট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যুক্ত।
আর রেলের এই বিভাগ সেনা জওয়ানদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখে।
ইতিমধ্যেই গুপ্তচরদের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এরা কোথায় কোথায় গেছেন সে তথ্যও হাতে এসেছে গোয়েন্দাদের। তবে যথেষ্ট কাঠ-খড় পুড়িয়ে এই তথ্য জোগাড় করেছেন গোয়েন্দারা।
অন্যদিকে জানা গেছে, পাকিস্তানের দূতাবাসে ভিসার জন্য যারা আবেদন করতেন তাদের আধার কার্ড সহ যাবতীয় নথি অপব্যবহার করা হতো। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এর নির্দেশেই দূতাবাসের দুই কর্তা ও তাদের গাড়িচালক এই সমস্ত নথি কাজে লাগিয়ে ভুয়ো নামছ সিম কার্ড তুলতেন। এরপর সেগুলি ভারতীয় সেনার নিচুতলার কর্মীও আধিকারিকদের ফাঁসানোর কাজে ব্যবহার করত।
গত মাস থেকেই পাকিস্তানের দূতাবাসের ওই দুই আধিকারিক ও তাদের চালকদের উপর নজর রাখছিলেন সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ। স্পেশাল সেলের অফিসাররা এদের হাতে নাতে ধরতে ফাঁদ পাতে। রবিবার করোলবাগ এলাকায় নিরাপত্তা সংস্থার এক আধিকারিক নিচুতলার সেনাকর্মী সেজে আবিত ও তাহের নামে ওই দুই পাক চরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে ঠিক হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী সেনার ভেক ধরা ওই নিরাপত্তা আধিকারিকরা নিজেদের জন্য একটি স্মার্টফোন ও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা দেওয়ার জন্য পাকিস্তান হাইকমিশনের গাড়ি নিয়ে আবিত , তাহের ও গাড়ি চালক জাবেদ করোলবাগে পৌঁছায়। আর তখনই তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে স্পেশাল সেলেরা অফিসাররা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে নগদ মোবাইল ফোন।
জানা গেছেসেনা সেজে থাকা ওই দুই নিরাপত্তা আধিকারিকের কাছ থেকে ভারতীয় সেনার ব্যবহৃত অস্ত্রের নকশা এবং কোন কোন এলাকায় সেনা মোতায়েন রয়েছে তার গোপন খবর জানতে চেয়েছিল ওই তিন পাক নাগরিক। এরপরই তাদের ধরার জন্য ফাঁদ পাতেন গোয়েন্দারা। আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে গ্রেফতার হয়েছে পাক হাইকমিশনের দুই কর্তা ও তাদের চালক।