স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ১৬ সেপ্টেম্বর: পদ্মফুলের জন্ম পাঁকে, কিন্তু তবুও পদ্মফুল পাঁক থেকে ওঠে তার গায়ে কোনও পাঁকের দাগ না নিয়ে। আসলে পদ্ম আমাদের এই ইঙ্গিতই দেয় যে পরিবেশই শেষ কথা নয়। খারাপ পরিবেশে জন্মেও অনেক ভালো কাজ করা যায়, দেশের সেরার শিরোপাও মেলে। তারই উদাহরণ হিসেবে পদ্ম আমাদের দেশের জাতীয় ফুল। শুধু তাই নয়, পদ্মফুল ছাড়া যে কোনও পুজোই আভূষনহীন। বিশেষ করে দেবী দুর্গার আরাধনা পদ্মফুল ছাড়া অসম্ভব। দুর্গাপুজার সন্ধিপুজোতে ১০৮টি পদ্মফুলেই দেবী তুষ্ট হন। কিন্তু এই পদ্মফুল যারা চাষ করেন তারাই আজ চরম দুর্ভোগে। হাজার হাজার পদ্মফুল চাষ করলেও করোনা আবহের কারণে এখনও পর্যন্ত কোনও পুজো উদ্যোক্তা পদ্মফুলের জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। করোনার আবহে এমনিতেই দুর্গাপুজোর এবার নমো নমো করে আয়োজন করতে চলেছেন আয়োজকেরা। ফলে এবার পদ্মফুল কি জলাশয়েই পড়ে থাকবে এই আশঙ্কাতেই দিন গুনছেন রায়গঞ্জ ব্লকের পদ্মচাষিরা।
শরতের আগমনীর বার্তার সাথে সাথে জলাশয়গুলিতে ভরে উঠেছে পদ্মের কুঁড়ি। রায়গঞ্জ ব্লকের ৫ নং শেরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পটলগ্রামের ধোদরা বিলে প্রতিবছরের মতো এবছরেও প্রচুর পদ্মের কুঁড়ি এসেছে। অন্যান্যবার বিশ্বকর্মা পুজোর আগে থেকেই দুর্গাপুজো কমিটির সদস্যরা গ্রামে এসে ফুলের জন্য অগ্রিম অর্থ দিয়ে যান চাষিদের। কিন্তু করোনা সংক্রমণের আবহে এবছর এখনো পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি এই ফুল চাষিদের সঙ্গে। ফলে মন খারাপ তাদের।
ফুলচাষি রবি বর্মন বলেন, “পুজোর আগে পদ্মফুলের জন্য বহু লোক গ্রামে আসেন। এই সময়টা ফুল বিক্রি করে বাড়তি কিছু পয়সা হাতে আসে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে পুজো নিয়েই দোলাচলে রয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। এখনো ফুলের অর্ডার পাইনি।”
ননীগোপাল বর্মন নামে অপর এক ফুলচাষি বলেন,
“লকডাউনের কারণে মানুষের হাতে অর্থ নেই। গ্রামের পুজোগুলিও খুব ছোটো করে হচ্ছে। ফলে এখনো পর্যন্ত পদ্মফুলের চাহিদা নেই। ফলে চরম সঙ্কটে উত্তর দিনাজপুর জেলার পদ্মচাষিরা।