Durga Puja, Pirakata, মাও আতঙ্ক কাটিয়ে বিগ বাজেটের পুজো পিড়াকাটায়, এবারের থিম ‘দেশ সুরক্ষায় বীর জওয়ানরা’

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ সেপ্টেম্বর: একসময় মাও আতঙ্কে প্রায় বন্ধই হতে বসেছিল পুজো। জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের একদা ‘মাও আঁতুড়ঘর’ হিসেবে পরিচিত সেই পিড়াকাটার দুর্গাপুজোতে এবার থাকছে বড় চমক। পুজোর থিমের নাম ‘দেশ সুরক্ষায় বীর জওয়ানরা।’ পহেলগাঁওয়ের সাম্প্রতিক জঙ্গি-হামলা এবং তারপর ভারতীয় সেনার পাল্টা অভিযানে পাকিস্তানের সমস্ত জঙ্গি ঘাঁটি নিকেশ করে দেওয়ার ঘটনাই উঠে আসবে থিমে।

পুজো উদ্যোক্তারা বলেন, প্রায় ৪২ লক্ষ টাকার প্যান্ডেলে আলোকসজ্জা ও অ্যানিমেশনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরণ উপত্যকায় ঘটে যাওয়া সেই ভয়াবহ জঙ্গি-হামলা এবং ভারতীয় সেনার পাল্টা অভিযানের প্রতিটি মুহূর্ত। আকাশে উড়বে রাফাল, সুখোই। দেখানো হবে S-400 মিসাইল সিস্টেম। জঙ্গি ঘাঁটি থেকে সেনা ক্যাম্প, কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং-এর সাংবাদিক বৈঠক সবকিছুই উঠে আসবে মন্ডপ সজ্জায়।

যুদ্ধ শেষে শান্তির বাতাবরণের মধ্য দিয়ে মন্ডপসজ্জা ফুটিয়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পুজো কমিটির সম্পাদক তথা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পরিমল ধল। সভাপতি প্রবীর সাউ বলেন, মণ্ডপ তথা থিমের সাথে মানানসই প্রতিমাও হবে পুজোর মূল আকর্ষণ।

কোষাধ্যক্ষ গৌতম দাস বলেন, “মণ্ডপ, প্রতিমা সহ ৫ দিনের নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অন্নকূট বিতরণ, রক্তদান ও বস্ত্রদান শিবির সহ পুজোর মোট বাজেট ধরা হয়েছে ৪০-৪৫ লক্ষ টাকা। পিড়াকাটা গ্রামবাসী, পিড়াকাটা বাজারের সমস্ত ব্যবসায়ী এবং অসংখ্য শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতাতেই এত বড় বাজেটের পুজো আয়োজন করতে চলেছি আমরা।”

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরেই মন্ডপ, প্রতিমা কিংবা পরিবেশের বিচারে জেলার অন্যতম সেরা পুজো হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে পিড়াকাটা বাজার দুর্গাপূজা কমিটির এই পুজো। তবে, এবারের আয়োজন তথা বাজেট সবকিছুকেই ছাড়িয়ে যাবে এবং জেলার শ্রেষ্ঠ পুজো হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে আশাবাদী পুজো উদ্যোক্তারা।

পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য গৌতম দাস বলেন, “আজ থেকে বছর পনেরো আগে, সেই ভয়াবহ মাও আতঙ্কের দিনগুলিতে (২০০৮-‘১০) গ্রামের একমাত্র দুর্গাপুজোও প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল। সন্ধ্যার আগেই নামত অন্ধকার। বাড়ি থেকে বেরনোটাই কার্যত দুঃসাহসের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের পর অবশ্য পরিস্থিতিরও পরিবর্তন হয়েছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছে জনজীবন। ২০১৮ সালের পর জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের সেই মাও ‘আঁতুড়ঘর’ পিড়াকাটাতে দুর্গাপুজোর সংখ্যাও এক থেকে বেড়ে দুই হয়েছে। সর্বজনীন দুর্গাপুজো ছাড়াও বাজার কমিটির সদস্যদের উদ্যোগে ধুমধাম সহকারে আয়োজিত হচ্ছে পিড়াকাটা বাজার দুর্গাপূজা কমিটির পুজো। প্রথম বছরই শালবনী ব্লকের সেরা পুজো এবং জঙ্গলমহলের অন্যতম সেরা পুজোর শিরোপা পেয়েছিল এই পুজো। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে বিশ্ববাংলা শারদ সম্মানেও ভূষিত হয়েছে।” এবারও যে তার ব্যতিক্রম হবে না তা নিয়ে আশাবাদী গৌতম, পরিমল, কাকলি, সোমা, সমিত-রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *