পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ এপ্রিল: রেলের অনুষ্ঠানে উঠলো জয় শ্রীরাম ধনী। আর তা নিয়ে শুরু হলো বিতর্ক। শাসক দলের নিশানায় বিজেপি। কিন্তু বিতর্কে আমল দিলেন না বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
মাসকয়েক আগেই বন্দে ভারত ট্রেনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাওড়া স্টেশনে উঠেছিল জয় শ্রীরাম স্লোগান। রুষ্ট হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ঠিক একই রকম ভাবে আজ মেদিনীপুর স্টেশনে রেলের অনুষ্ঠানে দিলীপ ঘোষ পৌঁছতেই উঠলো জয় শ্রীরাম স্লোগান। লিফট উদ্বোধন কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসেন তিনি। সেই সময় স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের ডিআরএম সহ একাধিক রেলের আধিকারিকরা। অস্বস্তিতে পড়ে যান রেলের কর্তারা।
এই ঘটনা নিয়ে সুর চড়িয়েছে শাসক দল তৃণমূল। জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরার দাবি এটাই বিজেপির সংস্কৃতি। যদিও এই নিয়ে বিতর্কের কিছু দেখছেন না দিলীপ ঘোষ। এদিন হাসিমুখেই তিনি সব বিতর্ক এড়িয়ে যান।
রাজ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি প্রসঙ্গে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, কুড়মিদের আন্দোলনের জেরে রেলের বহু টাকার লোকসান প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকেই দায়ী করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার রেলের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে মেদিনীপুর লোকসভার সাংসদ দিলীপ ঘোষ জানান, এই ধরনের আন্দোলন পশ্চিমবাংলায় বেশি হয়, আমরা সিএএ নিয়ে দেখেছি, নুপূর শর্মার ঘটনা দেখেছি, রেলকেই বেশি টার্গেট করা হয়। আর সম্প্রতি আদিবাসী কুড়মি সম্প্রদায়ের যে আন্দোলন, রেলকেই টার্গেট করা হচ্ছে, রেলের সম্পত্তি নষ্ট করা হচ্ছে। এর সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব এখানকার সরকারের। সুরক্ষা দেওয়া তো ছেড়ে দিন, তারা নেগোসিয়েশন পর্যন্ত করেনা, কথা পর্যন্ত বলেন না, কলকাতাতে জায়গায় জায়গায় ধর্না চলছে, কেউ দিল্লি চলে যাচ্ছে, তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সমাধানের যে চেষ্টা সেটা আমরা কখনো দেখিনি। যার ফলে নিত্যদিন লোকেদের জেদ বাড়ছে, তারা আন্দোলন করছে। রাজ্য সরকারের কথা বলার যদি মানসিকতা না থাকে তাহলে এই ধরনের সমস্যা বাড়বে।
তৃণমূলের জাতীয় দলের তকমা হারানো প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, এটা হওয়ার ছিল। কারণ সারা ভারতবর্ষের তিন চারটি রাজ্যে বিশেষ পরিমাণে সিট বা ভোট পেতে হয়। কোথাও কোথাও পেয়েও ছিল ওরা, কিন্তু পশ্চিমবাংলায় যে ধরনের প্রশাসন চলছে, স্বৈরাচারী শাসন, হিংসার রাজনীতি হচ্ছে, দুর্নীতি হচ্ছে। এটা দেখে সারা ভারতবর্ষের লোক বুঝে গেছে তৃণমূল কি। সেজন্য তাদের আর ভোট দিচ্ছেন না, সেজন্য সেই স্বপ্ন অসম্পূর্ণ থাকবে, প্রধানমন্ত্রী হওয়া বা দেশের রাজত্ব করা, এখন সেটা আর হবে না। তবে আমাদের লড়াই সব সময় কঠিন, আমরা সবসময় লড়তে প্রস্তুত আছি। আর এটা পশ্চিমবাংলার মানুষের জন্য খুব একটা আনন্দের নয়।
নিয়োগ দুর্নীতিতে শান্তনু ঘোষ ঘনিষ্ট অয়ন শিলের ১০০ কোটির সম্পত্তির হদিস প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, আরেকজন সেঞ্চুরি করলেন। বাংলায় অন্য কিছু হচ্ছে না, এগিয়ে বাংলা কেবল দুর্নীতিতে। একটার পর একটা নেতা পাওয়া যাচ্ছে শয়ে শয়ে কোটি টাকার মালিক হয়ে বসে আছে। আর সাধারণ মানুষের আবাস যোজনা টাকা চুরি হয়েছে, শৌচালয়ের টাকা চুরি হয়ে যাচ্ছে, কিষান সম্মান নিধি পাচ্ছেন না, সাধারণ মানুষের চাকরি নেই, ব্যবসা নেই, তারা বাংলা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আর টিএমসির নেতারা শ’ শ’ কোটি টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে।
যদিও আজকের এই বিষয় নিয়ে রেলের আধিকারিকদের তরফে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।