সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১২ জানুয়ারি: স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম জয়ন্তীতে বেলুড় মঠে গিয়ে ছাত্র যুবদের রাজনৈতিক বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের যুব সমাজের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বেলুড় মঠের মঞ্চ থেকে মোদি সিএএ-এর প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর চেষ্টা করেন। এটাও বলেন, এটা নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার নয়, দেওয়ার আইন। যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়েছে। একসুরে বিরোধিতা শুরু করেছে তৃণমূল-বাম-কংগ্রেস।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যেমন বেলুড় মঠের মঞ্চ ব্যবহার করে মোদির এই ভাষণের তীব্র নিন্দা করেছেন, একইভাবে নিন্দায় সরব হলেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র-সহ আরও অনেকে।
তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজনৈতিক স্বার্থে বেলুড় মঠকে ব্যবহার করলেন মোদি। মানুষের মন বুঝুন মোদি, কেন উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন? হিংসা ছাড়া আন্দোলন চাই৷ ঘোলা জলে অনেকে মাছ ধরছেন।’ মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন। বেকার যুবকদের চাকরি, নারী নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি করছেন। মঠের মঞ্চকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক বার্তা দিতে চেয়েছেন মোদি৷ এটা দুর্ভাগ্যজনক।’
এদিন এক বিবৃতি প্রকাশ করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, “আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দেশের অনেক নেতাকে বেলুড় মঠে আসতে দেখেছি। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অনেকবার বেলুড়মঠে এসেছেন, কিন্তু নরেন্দ্র মোদির মত রাজনীতি করতে দেখিনি। বেলুড়মঠকে রাজনীতির মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী এই পুন্য ভূমিকে কলুষিত করলেন।”
তাঁর কথায়, “বেলুড়মঠে দাড়িয়ে যেভাবে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের অসত্য প্রচার করলেন সেটা প্রকারান্তে স্বামী বিবেকান্দের অপমান। গান্ধীজির কথাকেও বিকৃত করলেন। গান্ধী দেশবিভাগের পরে ভারতে থাকা সব ধর্মের মানুষকে এখানে থেকে যেতে বলেছিলেন। মোদি ভোট ব্যাংকের রাজনীতি করার জন্য মানুষের মধ্যে বিভাজন করেন। তবে রামকৃষ্ণ মিশনের অনেক প্রাক্তনী মোদির রাজনীতিতে বিরক্ত হয়েছেন। বাংলার আপামর মানুষও বেলুড় মঠকে কলুষিত করার জন্য নরেন্দ্র মোদিকে ক্ষমা করবেন না।”