বাঁকুড়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে শ্যুট আউটের ঘটনায় আসানসোল থেকে গ্ৰেপ্তার অন্যতম অপরাধী

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৬ সেপ্টেম্বর: গত ৫ সেপ্টেম্বর বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন কেশিয়াকোল হনুমান মন্দিরের কাছে প্রকাশ্য দিবালোকে শ্যুট আউটের ঘটনায় আসানসোল থেকে এক দাগী অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে বাঁকুড়া পুলিশ। ধৃতের নাম প্রতাপ দাস। বাবার নাম বিশ্বজিৎ দাস। পশ্চিম বর্ধমান জেলার জামুড়িয়ার স্থায়ী বাসিন্দা হলেও বর্তমানে সে আসানসোলের এসবি গরাই রোডে থাকত। শুক্রবার তাকে আসানসোল এলাকা থেকেই গ্রেফতার করে বাঁকুড়ায় নিয়ে আসে জেলা পুলিশ।

আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই গ্রেফতারের কথা জানান বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি। তিনি বলেন, ওই দিন আঁততায়ীদের ফেলে যাওয়া মোটরবাইকের সূত্রে অনুসন্ধানের শুরু হয়। পাশাপাশি পুলিশ তার নিজস্ব সোর্স থেকেও অনেকটা সাহায‍্য পেয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বরের ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া এলাকার বাসিন্দা শেখ সাদ্দাম খুনের অভিযোগে বাঁকুড়া সংশোধনাগারে বন্দি ছিল। ওই দিন জামিনে জেল থেকে ছাড়া পায় সে। তাকে বাঁকুড়া থেকে একটি অল্টো গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন তারই আত্মীয় পরিজনেরা। গাড়িতে ৪ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা আইএনটিটিইউসির সম্পাদক নূর মহম্মদ শা। গাড়ি বাঁকুড়া শহর থেকে বেরিয়ে কেশিয়াকোলের কাছে আসতেই দুই বাইক আরোহী গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। ঘটনায় ৩ জন জখম হন। ঘটনাচক্রে সেই সময় বাঁকুড়া সদর থানার আইসি দেবাশিস পান্ডা সেখান দিয়ে শহরে আসছিলেন। তিনি কিছু একটা ঘটেছে আন্দাজ করে গাড়ি থেকে নেমে আঁততায়ীদের লক্ষ্য করে বন্দুক উঁচিয়ে তেড়ে গেলে তারা বাইক নিয়ে বাঁকুড়া শহরের দিকে পালিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ জেলার প্রবেশ পথে সমস্ত নাকা চেকিং শুরু করে।

পুলিশ সুপার জানান, দুষ্কৃতিরা সেটা বুঝতে পেরে যাত্রীবাহী বাসে চেপে পালিয়ে যায়। বাইকটি কেরানীবাঁধের বাউরি পাড়ার কাছে ফেলে যায়। বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখে জানা যায় গাড়ির মালিক প্রতাপ দাস। তারই সূত্র ধরে আসানসোল- দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সহযোগিতায় প্রতাপকে গ্ৰেপ্তার করে। মাত্র ২২ বছর বয়সেই খুন, চুরি ডাকাতি, গুলি চালানোর মত অসংখ্য ক্রিমিনাল কেসে নাম রয়েছে প্রতাপের। শুধুমাত্র আসানসোল দক্ষিণ ও উত্তর এবং হীরাপুর থানাতেই তার নামে ১১টি মামলা রয়েছে। পুলিশ সুপার জানান, ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার সঙ্গী দুষ্কৃতি ও এই চক্রের হদিশ পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সূত্র পাওয়া গেছে, তা তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখা হচ্ছে।

ওই দিন গুলিতে জখম হয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের দয়ালপুরের বাসিন্দা জিয়াবুল হক, গলসির তেঁতুল মুড়ির বাসিন্দা তথা পূর্ব বর্ধমান জেলার আইএনটিটিইউসি’র জেলা সম্পাদক নূর মহম্মদ শা। অপর আহত গোবিন্দ মন্ডলের বাড়ি গঙ্গাজলঘাঁটির পাবড়াডিহিতে। ৩ জনকেই বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ১ জন এখনও কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকি ২ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সকলেই বিপদ মুক্ত বলে জানাগেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *