আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ১৩ জুন: দেড়শো টাকা দৈনিক মজুরি বিশ্বভারতীর অতিথি শিক্ষকের। চোখ কপালে অনেকের। এটা ভাবা যায়? দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই পদে সর্বোচ্চ বারো হাজার বেতনে একজনের সংসার কেমন করে চলবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। বিশেষ করে যেখানে শুধুমাত্র আদালতে সহকর্মীদের দৌড় করাতে বিশ্বভারতীর লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হচ্ছে।
বিশ্বভারতীর নিজস্ব ওয়েবসাইটে এমন বিজ্ঞাপন দেখা গেছে। অবাক লাগারই কথা। বিশ্বভারতীর শিক্ষাসত্র বিভাগে উইভিং বিভাগে একজন অতিথি শিক্ষক নেওয়া হবে। সর্বোচ্চ মাসিক মাইনা বারো হাজার। পাশাপাশি উল্লেখ করা রয়েছে মোট আশিটি ক্লাস নিতে হবে। অর্থাৎ ক্লাস পিছু দেড়শো টাকা হিসেবে মজুরি পাবেন অতিথি শিক্ষক। এত নূন্যতম বেতন পরিকাঠামো পশ্চিমবঙ্গে কোথাও নেই। পশ্চিম বাংলায় নগরকেন্দ্রিক কর্মসংস্থান প্রকল্পের আওতায় অদক্ষ শ্রমিকদের দৈনিক বেতন ১৪৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০২ টাকা, স্বল্পদক্ষ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ১৭২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০৩ টাকা ও নতুন সৃষ্টি করা দক্ষ শ্রমিকদের দৈনিক বেতন করা হয়েছে ৪০০ টাকা। অথচ কোনো ক্ষুদ্র সংস্থা নয়। একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন অতিথি শিক্ষকের এমন বেতন কাঠামো দেখে নিন্দার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে। শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ বছরের ডিপ্লোমা বা বিএফএ ডিগ্রি। পাশাপাশি থাকতে হবে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে সম্যক জ্ঞান। আর বেতন ক্লাস পিছু দেড়শো টাকা। আবেদনের শেষ তারিখ ২২ জুন। আবেদনের ভিত্তিতে হবে ইন্টারভিউ।
এব্যাপারে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শিক্ষাসত্রে আগেও এইভাবেই নিয়োগ হয়েছে। এটা যে এই প্রথম হয়েছে, এমনটা নয়। এগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগের গাইড লাইন মেনেই হয়ে থাকে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।
বিশ্বভারতীর একটি সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, ছুটি বাদ দিয়ে মাসে বাইশটি ক্লাস নিতে হবে। সেদিক থেকে মাসে গড়ে চারটি ক্লাস পেলে দৈনিক ছয়শো টাকা আয় হবে।