জল সংরক্ষণের বার্তা নিয়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে কাঁকসার পথে নামল পড়ুয়ারা

জয় লাহা, দুর্গাপুর, ৫ জুন: বন্ধ হোক জলের অপচয় এবং প্লাস্টিক থার্মোকলের ব্যবহার। বন্ধ হোক পুকুর জলাশয় ভরাট। সংরক্ষণ হোক সবুজ বনানী, সংরক্ষণ হোক জল। রবিবার এইসব শ্লোগান সামনে রেখে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে পথে নামল ইশমাতারার পড়ুয়ারা।

গত কয়েকবছর ধরে প্রমোটারি থাবায় বিপন্ন জল জঙ্গল জমি। কখনও নির্বিচারে গাছ কেটে অবাধে মাটি চুরি হয়েছে। আবার গ্রীষ্মের চড়া গরমে আগুনের লেলিহান শিখায় গ্রাস করেছে হেক্টরের পর হেক্টর সবুজ অরোণ্য।

এছাড়া থার্মোকল, প্লাস্টিকের ব্যাবহারে মাটি দুষণ বেড়েছে। মাটির নীচে কোথাও কেথাও তৈরী হয়েছে প্লাস্টিকের স্তর। অবাধে চলছে পুকুর জলাশয়ে নোংরা, আবর্জনা ফেলা। তার ফলে পুকুর জলাশয়ের নাবত্যা কমছে। সংস্কার না হওয়ায় জমছে আগাছার জঙ্গল। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জলাশয় পুকুর ভরাট করে প্রমোটারি, আবাসন তৈরীর প্রবনতা বেড়েছে। সৌখিনতার যুগে বেড়েছে বাড়ির উঠোন কংক্রিট করার প্রবনতা। ভারি বৃষ্টি হলেও ওই জল নিকাশি নালা হয়ে সেচ ক্যানেল কিম্বা নদীতে পড়েছে। ফলে মাটির নীচে জল যাওয়ার কোন আশা থাকছে না।

যার দরুন ভূগর্ভস্থ জল সংরক্ষণে ভাটা পড়েছে। বিগত দশ বছর ধরে ভূগর্ভস্থ জলের টান যেভাবে পড়েছে, তাতে গ্রামীণ এলাকায় গরমের শুরুতেই প্রথম স্তরের বসানো নলকুপে জল ওঠা বন্ধ হয়ে পড়ে। চরম জল সঙ্কটের মুখে পড়তে হয় সাধারন মানুষকে। জল সংরক্ষনের জন্য কেন্দ্র সরকার সম্প্রতি আদর্শ পুকুর তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্য সরকার জল ধরো জল ভরো প্রকল্প নিয়েছে। কিন্তু তারপরও জল সংরক্ষনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অবৈধভাবে পুকুর জলাশয় ভরাট।

রবিবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসে জল সংরক্ষনের বার্তাকে সামনে রেখে ক্ষুদে পড়ুয়াদের নিয়ে পথে নামেন ইশমাতারা খাতুন। এদিন সকালে কাঁকসার সিলামপুরে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ক্ষুদে পড়ুয়ারা পদযাত্রা করে। প্ল্যাকার্ডে লেখা বার্তা ছিল সুষ্ঠ পরিবেশের স্বার্থে গাছ লাগানোর বার্তা। সবুজ রক্ষা করার বার্তা। শ্লোগান ছিল বন্ধ হোক পুকুর জলাশয় ভরাট। সংস্কার হোক ভরাট হওয়া পুকুর জলাশয়। ইশমাতারা খাতুন বিগত কয়েক বছর ধরে সুষ্ঠ পরিবেশের স্বার্থে বৃক্ষ রোপন সহ নানান সামাজিক কাজ করে চলেছে।

তিনি বলেন, “অবাধ প্লাস্টিক, থার্মোকল ব্যবহারের বিপন্ন জল, জমি। তাই আগামী প্রজন্মকে সুষ্ঠভাবে বাঁচিয়ে রাখতে দূষণ সৃষ্টিকারী প্লাস্টিক থার্মোকলের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। জলের অপচয় বন্ধ করতে হবে। তার সঙ্গে অবাধ বন সৃজন ও সবুজ রক্ষা করতে হবে। পুকুর জলাশয়ে নোংরা, আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা দরকার। ভরাট হওয়া, মজে যাওয়া পুকুর জলাশয় সংস্কার করে নাবত্যা বাড়াতে হবে। এটাই পরিবেশ দিবসের সঙ্কল্প হোক। তবেই হবে পরিবেশ দিবসের সার্থকতা।” 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *