বনগাঁয় ছেলেকে স্কুলে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল মা’র, আহত বাবা

সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১৬ জানুয়ারি: ফের বনগাঁয় পথ দুর্ঘটনার বলি হলেন একজন। ছেলেকে স্কুলে দিয়ে স্বামীর মোটর বাইকে করে বাড়ি ফেরার সময় বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হলো এক গৃহবধূর। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি স্বামী। মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণার বনগাঁর ছয়ঘড়িয়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বধূর নাম শ্রাবণী পাল (২৭)।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রের খবর, প্রতিদিনের মতো এদিন সকালেও বনগাঁর শিমুলতলা এলাকার বাসিন্দা সৌমেন পাল ও তাঁর স্ত্রী শ্রাবণী পাল তাঁদের ছেলেকে মোটর বাইকে করে স্কুলে দিতে যান। ছেলে ছয়ঘড়িয়ার সেন্ট জোসেফ স্কুলের ছাত্র। ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে তাঁরা দুজন বাইকে করেই বাড়ি ফিরছিলেন। যশোর রোড ধরে বনগাঁ শহরের দিকে কিছুটা আসার পরেই পেট্রাপোলের দিক থেকে বনগাঁর দিকে আসা একটি ট্রাক ওই বাইকে ধাক্কা মারলে রাস্তায় পড়ে যান দু’জনই। আর তারপর শ্রাবণীকে পিষে দিয়ে যায় ট্রাকটি। এর ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শ্রাবণীর। মাথায় আঘাত পেয়ে বনগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বামী সৌমেন। চোখের সামনে স্ত্রীর এই মর্মান্তিক মৃত্যু দেখে হতভম্ভ হয়ে যান সৌমেন। ট্রাকটিকে আটক করেছে পুলিশ।

এদিকে, বনগাঁ শহরের ট্রাক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মৃতার পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্যের স্বার্থ দেখতে গিয়ে স্থানীয় মানুষদের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে পুলিশ থেকে সাধারণ প্রশাসন। একদিকে অপর্যাপ্ত রাস্তা, বিপুল জনসংখ্যা, তার সঙ্গে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশের অপ্রতুলতা এবং প্রশিক্ষণহীন সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুরসভার কর্মীদের উদাসীনতার কারণে এমন দুর্ঘটনা বনগাঁয় ঘন ঘন হচ্ছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অপরিসর যশোর রোড দিয়ে ট্রাক চলাচলের ক্ষেত্রে সেভাবে নিয়ন্ত্রণ নেই প্রশাসনের। ফলে যখন যেমন ইচ্ছে ট্রাক যাতায়াত করছে শহরের উপর দিয়ে। এমনকি ট্রাকের খালাসীরাও ট্রাক চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, সকালে স্কুলের সময় কেন এইভাবে ট্রাকগুলিকে ছাড়া হচ্ছে? এব্যাপারে প্রশাসনকে আরও বেশি সতর্ক এবং কড়া হাতে যান নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানিয়েছেন বনগাঁর মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *