জে মাহাতো, আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ১৯ ফেব্রুয়ারি: ভোটারদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় একই দিনে তিন তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।
জানা গেছে, কাঁথি পুরসভার ৫, ৬ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সমর্থক তিনজন ভোটার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। পুর নির্বাচনে প্রচারে নেমে কাঁথির বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভোটারদের হুমকি দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন বিজেপি প্রার্থীদের ভোট না দিলে পরিণাম খারাপ হবে। শুধু শুভেন্দু অধিকারীই নন, তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরাও ভোটারদের এরকম হুমকি দিচ্ছে বলে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী পুরো ঘটনাকেই তৃণমূলের ভোটে জেতার মরিয়া চেষ্টা বলে কটাক্ষ করে বলেন, বিধান নগরে মৃত সঙ্গীত শিল্পীকে ভোট দেওয়া করিয়েও শান্তি পাচ্ছে না তৃণমূল।
কাঁথি থানায় এরকম অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে হিংসায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ তুলে পৃথক ৩ টি মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এই মামলাগুলি দায়ের হয়েছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪, ৩৪১, ৫০৬ ও ৫০৯ ধারা অনুযায়ী। এরমধ্যে একটি ধারা জামিন অযোগ্য।
কাঁথির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা বলেছেন, ৩ টি অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং সেগুলির তদন্ত শুরু হয়েছে।
আজ শনিবারই মামলা সংক্রান্ত নোটিশ পাঠানো হবে শুভেন্দু অধিকারীকে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ভোটারদের এভাবে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠলেও ওই দিনই প্রচারের সময় শুভেন্দু অধিকারীকেও তৃণমূল কর্মীদের বাধার মুখে পড়তে হয়। বৃহস্পতিবারের মত শুক্রবারও কাঁথি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচুর সংখ্যক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক শুভেন্দু অধিকারীকে ঘিরে ধরেন এবং তাঁর উদ্দেশে গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন।
কাঁথির সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তরুণ মাইতি বলেন, মানুষ ওঁদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। তৃণমূলে থাকার সময় তাঁদের চলনবলন সবই আলাদা ছিল। বিজেপিতে গিয়ে এখন নিচে নামতে হচ্ছে। মানুষের কাছে যেতে হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি আবেদন জানাতে গিয়েও সমর্থন আদায় করতে পারছেন না। সে কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে মেজাজ হারাচ্ছেন। আর এমন আচরণ করছেন।’ হুমকি ও মামলার ব্যাপারে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি শুভেন্দু। তবে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, তৃণমূলকে মানুষ বহিষ্কার করেছে। বিধাননগরে ওই জন্য টিপ দিয়ে ভোট দিতে হয়েছে এবং দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়কে স্বর্গ থেকে নামাতে হয়েছে। তৃণমূলের লজ্জা থাকা উচিত।
অবশ্য বহু আগের শীর্ষ আদালতের এক রায় অনুযায়ী বিরোধী দলনেতাকে গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলেও পুলিশকে তাঁরই দেওয়া সময় অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।