আমাদের ভারত, ২৮ অক্টোবর: পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ সাজস করে ভারতে অশান্তি পাকানোর মতলব করছে বাংলাদেশ। অপারেশন সিঁদুরে নাস্তানাবুদ হবার পর পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আই এস আই, মৌলবাদী দলগুলি এবং জঙ্গি গোষ্ঠীরা বাংলাদেশের সাহায্য নিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের দিকে নজর দিয়েছে।
পাকিস্তানের দ্বিতীয় শীর্ষ সেনাকর্তার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরে আরো একজনকে দেখা গিয়েছে যে লস্কর- ই- তৈবার মালিক হাফিজের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সহচর। শুধু তাই নয়, হাফিজ ঘনিষ্ঠই জঙ্গি নেতাকে সাদরে বরণ করেছে বাংলাদেশের মৌলবাদী কট্টর ইসলামী সংগঠনগুলি। সবকিছুই ঘটেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুসের পুলিশের চোখের সামনে।
লস্কর প্রধান হাফিজ সৈয়দের ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে বাংলাদেশে দেখা যাওয়ার পরই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সজাগ হয়ে গিয়েছে। কারণ এই জঙ্গি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় বেশ কয়েকটি কর্মসূচি চালিয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। ইবতিসাম ইলাহী জাহির পাকিস্তানের মারকাজি জমিয়াত আল ই হাদিয়াতের জেনারেল সেক্রেটারি আমেরিকার আন্তর্জাতিক জঙ্গি তকমাধারী হাফিজের দীর্ঘদিনের ছায়াসঙ্গি। ইলাহিও ঢাকায় এসেছে গত ২৫ অক্টোবর। আর আসার পর থেকেই উত্তেজনাপ্রবণ সীমান্ত জেলাগুলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
জানাগেছে, এইসব এলাকায় উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছে সে, এবং স্থানীয় মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে একের পর এক আলোচনা সভা সেরেছে।
গত দু’দিনে সে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে মিটিং করেছে। এই সপ্তাহে তার রংপুরে যাওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। মহম্মদ ইউনুস জমানায় এ নিয়ে দ্বিতীয় বার সে বাংলাদেশ সফরে এলো। এর আগেই প্রায় সপ্তাহখানেক সফরে এসেছিল ফেব্রুয়ারিতে।
জাহিরের সালাফি কনফারেন্সে যোগ দেবে। রাজশাহীতে এই কট্টর ইসলামীদের বিশাল মন্ত্রনা সভা হবে। ৬-৭ নভেম্বর জাহির এই দফায় প্রায় ১২ দিন বাংলাদেশে কাটাবে বলে অনুমান। যে কারণে ভারতে নতুন কোনো অশান্তি পাকানো ছক কষা চলছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ভারতকে চাপে ফেলতে বাংলাদেশের সাহায্য নিতে চাইছে পাকিস্তান। সেই কারণেই হাফিজ বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন জাহিরকে। গত ২৫ অক্টোবর সে রাজশাহীর শাহ মাকদুম বিমানবন্দরে এসে নামে। তাকে স্বাগত জানায় আব্দুর রহিম বিন আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ব্যক্তি, যে আল-জামিয়া আস সালিপার সদস্য। এই সংস্থাটি একটি ইসলামিক গবেষণা কেন্দ্র। সোমবারে জাহির চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় যায়, সেখানে স্থানীয় মসজিদগুলির ইমামদের সঙ্গে আলোচনা করে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জাহির একটি সভায় উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়ে বলে, ইসলামের জন্য তোমাদের সকলকে কুরবানী দিতে তৈরি থাকতে হবে। নিজের সন্তানকে কুরবানী দিতে তৈরি থাকো। ধর্মনিরপেক্ষ উদারপন্থী শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত সমস্ত মুসলিমকে এক হতে হবে। ধর্মনিরপেক্ষদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। কাশ্মীর নিয়ে সে বলে কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ভারতে কাশ্মীরে যে দমনমূলক আইন চলছে এবং ইসলাম বিরোধী কাজ চলছে তার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে পাকিস্তান সরকারকে। আল্লাহর দোয়ায় সেদিন আর দূরে নয়, যখন কাশ্মীর পাকিস্তানের হয়ে যাবে।

