আমাদের ভারত, ১২ মার্চ: সিএএ নাগরিকত্ব কেড়ে নেবার আইন নয়, বরং নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। এতে মুসলিমদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। এই আইন কার্যকর করার পর তাকে স্বাগত জানিয়ে এমনটাই বার্তা দিলেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাত সংগঠনের প্রধান মৌলানা মুফতি শাহাবুদ্দিন রজভি বারেলভি।
সোমবার রাতে দেশজুড়ে সিএএ কার্যকর করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এরপরই বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির উপর এই আইন আঘাত আনবে সরাসরি। এই আইনের বিরোধিতায় সরব হয়েছে একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দল। কিন্তু সিএএ নিয়ে তুমুল চর্চার মাঝেই আইন সমর্থন করে বার্তা দিলেন রজভি।
তিনি বলেন, এই আইন অনেক আগেই কার্যকর করা উচিত ছিল ভারত সরকারের। কিন্তু সত্যিটা না বুঝে কিছু মানুষের তীব্র বিরোধিতায় তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে তা কার্যকর হয়েছে। সব মুসলিমদের উচিত এই আইনকে সমর্থন করা। রিজভি আরো বলেন, এই আইন বিশদে পড়ার পর আমাদের কাছে স্পষ্ট যে, সিএএ’র সঙ্গে মুসলিমদের কোনো সম্পর্ক নেই।
আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে এসে যারা ভারতে বসবাস করছেন তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য এই আইন। এই আইনের কারণে ভারতে বসবাসকারী কোটি কোটি মুসলমানদের নাগরিকত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না। শত শত বছর ধরে মুসলিমরা ভারতবর্ষে বাস করছে। তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া সম্ভব নয়। যারা মুসলিমদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার ভয় দেখাচ্ছেন, তাদের আইনটি পড়ে নেওয়া উচিত। না জেনে কথা বলা ঠিক নয়। তাতে মুসলিমরা আতঙ্কিত হবে এবং দেশে অরাজকতা তৈরি হবে। একই সঙ্গে বিরোধীদের আক্রমণ করে ওই মুসলিম নেতা বলেন, কিছু রাজনৈতিক মুসলিম ভোট পাওয়ার জন্য অবান্তর মিথ্যা বয়ান দিচ্ছেন। তাতে লাভ কিছু হবে না। দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক বদলে গিয়েছে।
পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে আনা হয় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হলেও বিধি এতদিন বলবৎ করা যায়নি। সোমবার সন্ধ্যায় গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে তা কার্যকরী করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। লোকসভা ভোটের আবহাওয়ায় কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে শোরগোল পড়ে গেছে।পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া গড়ে আনন্দে মেতেছে মানুষ, কিন্তু উত্তর-পূর্বের আকাশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে এই আইন নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে সিএএকে সমর্থন করে বার্তা দিলেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাত সংগঠনের প্রধান।