আত্মহত্যা নয়, ভাইকে থানায় পিটিয়ে মারা হয়েছে, দাবি দিদির

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৩১ অক্টোবর: ফের অপহরণ করা হল মল্লারপুরে পুলিশ হেফাজতে মৃত শুভ মেহেনার বাবা-মাকে। তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিশোরের মেসোকেও। রাতভর বাড়ি ঘিরে রেখেছে তৃণমূলের নেতা কর্মী এবং পুলিশ। বিজেপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাত এড়াতেই ফের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। কিশোরের দিদির দাবি, ভাইকে থানায় পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মল্লারপুর থানার হেফাজতে মৃত্যু হয় কিশোর শুভ মেহেনার। ভোর রাতে পুলিশ তার বাবা মাকে বাউড়ি পাড়ার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লুকিয়ে রাখে। সন্ধ্যেয় পুলিশ এবং তৃণমূলের তৎপরতায় মৃতদেহ তারাপীঠ শ্মশানে দাহ করা হয়। রাতের দিকে বাবা মাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও শনিবার ভোরের দিকে ফের তাদের তুলে নিয়ে যায় তৃণমূলের লোকজন। কারণ এদিন বিজেপির পক্ষ থেকে মল্লারপুর বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে দলের যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি, সাংসদ সৌমিত্র খাঁর নেতৃত্বে থানা অভিযান কর্মসূচি ছিল। তাই বাবা মায়ের সঙ্গে যাতে বিজেপি প্রতিনিধি দল দেখা করতে না পারে তাই ফের তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে পরিবারের অভিযোগ।

কিশোরের দিদি এদিন পরিষ্কার জানিয়ে দেন তার বাবা বিজেপি সমর্থক। তিনি বলেন, “এখন জোর করে তৃণমূল বলানো হচ্ছে। সারা রাত বাড়ির চারিপাশে তৃণমূল ও পুলিশ ঘোরাফেরা করছে। কারও সঙ্গে কথা বলতে দিচ্ছে না তারা। রাতে তারাপীঠ থেকে ফিরে বাবা মা ও মাসি মেসো বাড়ির বাইরে শুয়ে ছিলেন। ভোরের দিকে কিছু লোকজন তুলে নিয়ে যায়। দুপুর পর্যন্ত বাবার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি”। তার দাবি ভাইকে থানার মধ্যে পিটিয়ে মারা হয়েছে। আমরা খুনের তদন্ত চাই। বাবাকে প্রশাসন যা সেখাচ্ছে তাই বলছে।

কিশোরের মাসি শেফালী মেহেনা বলেন, “সারারাত বাড়ির চারিপাশে লোকজন ঘোরাফেরা করেছে। ভোরের দিকে উঠে দেখি দিদি জামাইবাবু নেই। পরে শুনলাম কিছু লোক এসে তুলে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোথায় নিয়ে গিয়েছে জানি না”।

বড় মাসি লক্ষ্মী মেহেনা বলেন, “ভোরের দিকে আমার বোন ও জামাইবাবুকে তুলে নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে আমার স্বামীকেও নিয়ে যায়। ভোরের দিকে কিছু লোক নিয়ে গিয়েছে”।

শুভর মামি ঝুমা মেহেনা বলেন, “তৃণমূলের লোকজন দু’বস্তা চাল, তেল নুন দিয়ে গিয়েছে। ভোরের দিকে দুজন এসে তাঁরাই তুলে নিয়ে গিয়েছে। আমাদের বিশ্বাস পুলিশ ভাগ্নেকে মেরে দিয়েছে। তা না হলে লক আপের মধ্যে দড়ি পাবে কথা থেকে? ননদরা পুলিশের শেখানো কথা বলছে। তদন্ত করলেই সব সামনে আসবে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *