আমাদের ভারত, ২৭ জুলাই: জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাঁও হামলার পর মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। তারপর ১৭ জুন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রপতির কোনো কথাই হয়নি। সোমবার সংসদে এমনটাই জানালেন বিদেশ মন্ত্রী এস জয় শঙ্কর। এক কথায়, ভারত- পাক যুদ্ধ থামাতে আমেরিকার ভূমিকার যে দাবি ট্রাম্প করছেন তা নস্যাৎ করে দিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রী।
পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত নিয়ে ভারত- আমেরিকার সেভাবে কোনো আলোচনাই হয়নি বলে জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট করেন, পরবর্তী সময়েও আলোচনায় বাণিজ্যের কোনো ভূমিকা ছিল না। লোকসভায় বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বক্তব্য, মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প যতবারই দাবি করুন না কেন যে তিনি বাণিজ্য নিয়ে চাপ দিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধ থামিয়েছেন, বাস্তবে তার কোনো ভিত্তি নেই।
সোমবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ২২ এপ্রিল থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের মধ্যে কোনো কথাই হয়নি। অর্থাৎ পেহেলগাঁও হামলার দিন থেকে ভারত- পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতি ঘোষণার দিন পর্যন্ত কোনো কথাই হয়নি তাদের মধ্যে।
জয়শঙ্করের কথায়, শুধু ১০ মে আমরা একটা ফোন পাই। জানানো হয়েছিল, পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতিতে রাজি। আমরা বলেছিলাম, ডিজিএমও চ্যানেলে এ কথা বলতে হবে পাকিস্তানকে।
অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারতের সঙ্গে আমেরিকার যোগাযোগ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি জে ডি ভান্স প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ফোন করে জানান, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একটি বড়সড় হামলার প্রস্তুতি চলছে। মোদীর জবার ছিল ভারত তার চেয়েও কঠিন জবাব দেবে।
এরপর ৯ ও ১০ মে পাকিস্তানের একাধিক আক্রমণ রুখে দেয় ভারত। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ ভারতকে জানায় ইসলামাবাদ যুদ্ধ বিরতির জন্য প্রস্তুত। বিদেশ মন্ত্রীর কথায়, ভারত তখন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পাকিস্তান যদি যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব দিতে চায় তবে সেটি ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন ডিজিএম- এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে।
তাঁর বক্তব্য চলাকালীন বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে, তাহলে কেন ট্রাম্প বারবার বাণিজ্যের প্রসঙ্গ তুলছেন। তাতে হস্তক্ষেপ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তাঁর মন্তব্য, নিজেদের বিদেশ মন্ত্রীর কথা মানছেন না অথচ অন্য দেশের কথা এত বিশ্বাস।
সরকারি তরফে স্পষ্ট বার্তা, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের সময় কূটনৈতিক স্তরে যে আলোচনা হয়েছিল, তাতে কোনভাবেই বাণিজ্যকে চাপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়নি। ভারতের অবস্থান ছিল স্পষ্ট। কূটনীতি ও নিরাপত্তা দুটো ক্ষেত্রেই দেশ নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেবে বলে জানানো হয়েছিল স্পষ্ট ভাষায়।