সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৬ মে: পৃথিবীর এমন কোনও শক্তি নেই যে লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করে দেবে। আমরা বুক দিয়ে তা রক্ষা করবো বলে মন্তব্য করে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি জিতলে ৩ মাসের মধ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হয়ে যাবে।
আজ বেলিয়াতোড়ে তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মন্ডলের সমর্থনে আয়োজিত এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপস্থিত মহিলাদের উদ্যেশ্যে বলেন, কী মায়েরা আপনাদের মুখ শুকিয়ে গেল কেন। না একথা আমি বলছি না। একথা বলেছেন কোচবিহারের বিজেপি জেলা সহ-সভাপতি দীপা চক্রবর্তী। বলেই একটি অডিও ক্লিপ শোনান তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের জনসভায় এভাবেই বিজেপির স্বরূপ বর্ণনা করে তিনি বলেন, ২৫ তারিখে ইভিএম এমন ভাবে টিপুন যাতে দিল্লিতে ভূমিকম্প হয়। বিজেপি হারলে ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসবে। তখন সব বকেয়া আদায় করে আনবো বলে তিনি সুজাতাকে জেতানোর আহ্বান জানান। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তাহলে লক্ষ্মীর ভান্ডার থাকবে। রূপশ্রী, কন্যাশ্রী, খাদ্যসাথী, বিনা পয়সায় রেশন কেউ বন্ধ করতে পারবে না।
তিনি বলেন, বিষ্ণুপুরের এমপি সৌমিত্র খাঁ বলেছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভান্ডার ৩ হাজার করে দেবেন। সৌমিত্রকে আপনারা প্রশ্ন করুন আপনারা ১৮ রাজ্যে ক্ষমতায় আছেন, একটা রাজ্যে চালু করতে পেরেছেন। সৌমিত্র খাঁ কোনো জবাব দিতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব বলে জানান অভিষেক। তিনি বলেন, আমরা যা বলি তাই করি। সৌমিত্রর দলের মত ধাপ্পাবাজি প্রতিশ্রুতি দিইনা। তিনি বলেন, গত বছর আমি নব জোয়ার যাত্রা করেছিলাম। বহু মা আমাকে বলেছিলেন, আমাদের লক্ষ্মীর ভান্ডার বাড়িয়ে দাও। অনেক গরিব মানুষ হাতে ধরে বলেছিলেন, আমরা ১০০ দিনের কাজ করে ৩ বছর ধরে টাকা পাইনি। আমি কথা দিয়েছিলাম। লক্ষ্মীর ভান্ডার ডবল হয়েছে। ১০০ দিনের টাকা মোদী আটকে রেখেছেন। কিন্তু আমরা তা দিয়ে দিয়েছি। বিজেপি এটা করছে বাংলায় হেরেছে বলে। কিন্তু তৃণমূল পক্ষপাতের রাজনীতি করে না। তিনি বলেন, বিষ্ণুপুর লোকসভায় এ জেলার ৬ টি বিধানসভার মধ্যে ৫ টিতে এবং বাঁকুড়ায় তৃণমূল ৩ টিতে হেরেছে।
তিনি জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, কোথাও কোনো প্রকল্প বন্ধ হয়েছে? তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, বাঁকুড়ায় ৮ হাজার কোটি টাকার রাস্তা হয়েছে। ৯ লাখ ১২ হাজার ১৫১ জন লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছেন। ৩৬ লাখ ২২ হাজার ৫৪১ জন বিনা পয়সায় রেশন পাচ্ছেন। সৌমিত্র খাঁ সম্পর্কে তিনি বলেন, উনি যতদিন তৃণমূলে ছিলেন ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকাতে পারেনি মোদী। যেই বিজেপির জামাটা গায়ে চাপালেন অমনি সব বন্ধ হয়ে গেল। তিনি বলেন, শুনলাম নরেন্দ্র মোদী বিষ্ণুপুরে জনসভা করবেন। সৌমিত্রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ওই সভায় আমাকেও ডাকা হোক। তোমার মোদী গত ১০ বছরে কী করেছে তার হিসেব দিক আর আমরা কী করেছি তার খতিয়ান ধরিয়ে দেবো।
এপ্রসঙ্গে সৌমিত্র খাঁ বলেন, তুমি কী আনবে? শিক্ষক বিক্রির টাকার হিসাব, গরু পাচারের টাকার হিসাব, কত কয়লা খেয়েছো তার হিসাব, বালুদা কত চাল খেয়েছে তার হিসাব, তোমার দলের কতজন মন্ত্রী বিধায়ক নেতা জেলে রয়েছেন তার হিসাব, তোমার পিসির সরকারের কত জন আমলা জেলে তার হিসাব ছাড়া আর কী আনবে বলে অভিষেকের বক্তব্যের জবাব দেন।