Budget, Ghatal Master Plan, কেন্দ্রীয় অন্তবর্তী বাজেটে অর্থ বরাদ্দ হয়নি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে, বাজেটের প্রতিলিপি পুড়িয়ে বিক্ষোভ দুই মেদিনীপুরের বানভাসীদের

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৫ ফেব্রুয়ারি: ২০২৪ সালের অন্তবর্তী কেন্দ্রীয় বাজেটে বহু প্রতিক্ষীত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। প্রতিবাদে আজ পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বানভাসীরা ঘাটালের কলেজ মোড় সংলগ্ন পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ডে বাজেটের প্রতিলিপি পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখায়। বিদ্যাসাগর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে মিছিল করে পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ডে বাজেটের প্রতিলিপি পোড়ান।প্রতিলিপিতে অগ্নিসংযোগ করেন কমিটির সভাপতি ডাঃ বিকাশ চন্দ্র হাজরা। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, কমিটির কার্যকরী সভাপতি সত্যসাধন চক্রবর্তী, অফিস সম্পাদক কানাই লাল পাখিরা প্রমুখ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেন্দ্র ও রাজ্য বাজেটে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়ে গত ১৭ জানুয়ারি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং সেখাওয়াত ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১ ফেব্রুয়ারি অন্তবর্তী কেন্দ্রীয় বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ওই প্রকল্পের বিষয়ে কোনো উল্লেখ না করায় পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় ২০ লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক ও দেবাশীষ মাইতি বলেন, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তেরোটি ব্লকের স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রায় কুড়ি লক্ষাধিক অধিবাসীকে প্রতি বছরের বন্যার হাত থেকে মুক্তি দিতে তৈরি হয় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। কিন্তু কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার নানা অজুহাতে টালবাহানা করে এখনো পর্যন্ত তাতে কোনো অর্থ বরাদ্দ করেনি। ফলস্বরূপ দুই জেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রত্যেক বছর বর্ষার সময় সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।

আরো উল্লেখ্য, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান ২০১৫ সালে গঙ্গা বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন (জি.এফ.সি.সি) ও কেন্দ্রীয় সরকারের জলসম্পদ দপ্তরের ছাড়পত্র পায়। এরপর কেন্দ্র ও রাজ্য কোনো সরকারই এই মেগা প্রকল্পের জন্য কত শতাংশ টাকা দেবে, তা নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে। ইতিমধ্যে ফি বছরের বন্যা কিন্তু থেমে নেই। বরং বন্যার ভয়াবহতা বেড়েই চলেছে।

বিক্ষোভ সভায় নারায়ণবাবু বলেন, গত ২০২২ সালে প্রকল্পটি কেন্দ্রের ফ্ল্যাড ম্যানেজমেন্ট এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ক্লিয়ারেন্স কমিটির ছাড়পত্র পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় শাসক দলের নেতারা টাকা মঞ্জুর হয়ে গিয়েছে বলে ঘাটালে বিজয় সমাবেশ করেন। যেখানে কেন্দ্রীয় অর্থ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরীও যোগ দেন। অন্যদিকে রাজ্যের শাসকদলও পিছিয়ে রইল না। তারাও বললেন, রাজ্য ইতিমধ্যে ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে পলসপাই, দুর্বাচটী, ক্ষীরাই, বাক্সী, ক্ষীরাই-বাক্সী, নতুন কাঁসাইয়ের নিম্নাংশ, চন্দ্রেশ্বর প্রভৃতি নদী ও খাল সংস্কার করেছেন। অথচ প্রকল্পের জন্য কোনও সরকারের পক্ষ থেকেই কোনও টাকা মঞ্জুর করা হয়নি। এই অবস্থায় আসন্ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করে আগামী বর্ষার পূর্বেই শীলাবতী নদীর অংশে কাজ শুরুর দাবিতে গত মাসে উভয় সরকারের মন্ত্রীদের আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বাজেট ভাষণ অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলাবাসীকে আশাহত করেছে।

উনি আরো বলেন, আমরা আজ ঘাটালে কেন্দ্রীয় বাজেটের প্রতিলিপি পুড়িয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি করছি। জানি না, পশ্চিম বঙ্গ সরকার আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বাজেটে কোনো অর্থ বরাদ্দ করবেন কিনা। যদি করেন ভাল, তা না হলে রাজ্য বাজেটের পর আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি নিতে বাধ্য হব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *