আমাদের ভারত, ১৮ আগস্ট: ১৮ আগস্টকে একরকম নেতাজির মৃত্যু দিন হিসেবে ঘোষণা করে কংগ্রেস ও বিজেপির একাধিক নেতৃত্ব একের পর এক টুইট করেছেন আদ। আর তাতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে ব্যপক বিতর্কের ঝড়। প্রথম থেকেই ১৮ আগস্টকে সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু দিন বলে এসেছে কংগ্রেস। তবে পোক্ত প্রমান না থাকায় সুভাষ চন্দ্রের মৃত্যু দিন পালিত হয় না। কিন্তু হঠাৎ আজ দেখা গেল কংগ্রেসের সাথে সাথে বিজেপির একাধিক নেতৃত্ব সুভাষচন্দ্রের মৃত্যুদিন পালন করেছেন। আর তাতেই প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি বিজেপিও ১৮ আগস্টকে সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু দিন হিসেবে ধরে নিয়েছে?
নেতাজির কালজয়ী সব উক্তিকে তুলে ধরে, ভারি ভারি শব্দ ব্যবহার করে তার প্রশংসা করে, তার মৃত্যু দিন উদযাপন করেছেন অনেকে টুইটারে। হ্যাঁ সেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু যা নিয়ে এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই। কিন্তু কংগ্রেস বা বিজেপি দলের নেতারা ১৮ আগস্ট দিনটিকে সুভাষচন্দ্র বসুর প্রয়াণ দিবস হিসেবে পালন করা শুরু করে দিলেন। নেতাজির প্রতি নিজেদের ভালোবাসা শ্রদ্ধা প্রকাশ করতে গিয়ে বিতর্কের ঝড় তুলে দিয়েছেন দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল।
A national hero, Netaji Subhas Chandra Bose's dedication towards our Nation has been a source of inspiration for millions of Indians. We pay our heartfelt tributes to him today, on his death anniversary, for fighting unrelentingly for a free, united and prosperous India. pic.twitter.com/vMkcaHxzXh
— Congress (@INCIndia) August 18, 2020
মঙ্গলবার একেবারে সকাল-সকাল কংগ্রেসের দলীয় টুইটার হ্যান্ডেলের টুইট করে বলা হয় নেতাজি একজন জাতীয় নায়ক। দেশের প্রতি তার দায়বদ্ধতা আজকের প্রজন্মের কাছে আদর্শ। তার প্রয়িণ দিবসে আমরা আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। এরপরে হার্দিক পাটেল থেকে শুরু করে কংগ্রেসের ছোট-বড় অনেক নেতাই নেতাজিকে শ্রদ্ধা করে পোস্ট করা শুরু করেন।
কিন্তু অদ্ভুত হলেও এই ঘটনায় পিছিয়ে নেই বিজেপি নেতৃত্বও। প্রয়াণ দিবস বলে নেতাজিকে স্মরণ করেছেন খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রমেশ পখরিয়াল নিশাঙ্ক। তিনি টুইটারে লিখেছেন আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতিষ্ঠাতা তথা অদ্বিতীয় নেতা এবং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রণী সেনানী নেতাজিকে তার পূণ্য তিথিতে কোটি কোটি প্রণাম।
आज़ाद हिन्द फौज के संस्थापक, अद्वितीय योद्धा एवं भारतीय स्वतंत्रता संग्राम के अग्रणी सेनानी नेताजी सुभाष चंद्र बोस जी की पुण्यतिथि पर कोटि-कोटि नमन!
'नेताजी' का संघर्ष, बलिदान और देश के लिए समर्पण भाव सभी युवाओं के लिए प्रेरणास्त्रोत है।
जय हिंद! pic.twitter.com/m3cCz3GmYh— Dr. Ramesh Pokhriyal Nishank (@DrRPNishank) August 18, 2020
আরও এক শীর্ষ স্থানীয় বিজেপি নেত্রী তথা রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়াও একইকাজ করেছেন। তিনিও টুইটারে নেতাজির মৃত্যু দিন পালন করেছেন। আর তাতেই প্রশ্ন উঠেছে,তাহলে কি এবার পদ্ম নেতৃত্বও ১৮ আগস্টকে নেতাজির মৃত্যু দিন হিসেবে একরকম ঘোষণা করে দিলেন?
तुम मुझे खून दो, मैं तुम्हें आज़ादी दूंगा!
आज़ाद हिन्द फौज के संस्थापक, महान स्वतंत्रता सेनानी नेताजी सुभाष चन्द्र बोस की पुण्यतिथि पर चरण वंदन। देश की स्वतंत्रता के लिए उनके संघर्ष की कहानी व स्मरण मात्र ही देशवासियों को राष्ट्रभक्ति की भावना से भर देता है।#subhaschandrabose pic.twitter.com/Ojcz44815i— Vasundhara Raje (@VasundharaBJP) August 18, 2020
আজও রহস্যে রয়েছে নেতাজির মৃত্যু দিন। ১৮ আগস্ট ১৯৪৫ সালে তাইওয়ানের একটি বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়।কিন্তু এই দাবির সপক্ষে এখনো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অনেকেই মনে করেন সেদিনের বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়নি। তিনি অন্তর্হিত হয়েছিলেন শুধু। আর সেই কারণেই প্রশ্ন উঠেছে এই বিতর্কিত বিষয়টি নিয়ে কেন বিজেপি ও কংগ্রেসের নেতারা টুইট করলেন? তারা কি ইতিহাস জানেন না? নাকি ইচ্ছাকৃত নেতাজিকে অসম্মান করা হলো?
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নেতাজিকে অসম্মান করার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। নেহেরু গান্ধীদের সম্মান করতে গিয়ে কংগ্রেসের কাছে সুভাষচন্দ্র বসু চিরকালই উপেক্ষিত থেকেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। কিন্তু কেন সেই একই কাজ করলেন আজ বিজেপি নেতৃত্ব?
কংগ্রেস প্রথম থেকেই দাবি করে এসেছে ওই বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষ চন্দ্রের মৃত্যু হয়েছে। ১৯৪৬ সালের খোদ বল্লভ ভাই প্যাটেল সেই কথা জানিয়েছিলেন। মোরাজ্জি দেশাইও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী থাকাকালীন এই বয়ান দিয়েছিলেন। এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি কমিটি ও কমিশনও তৈরি হয়েছে। কিন্তু নেতাজির মৃত্যু কোন দিনে হয়েছিল তার তারিখ এখনো পর্যন্ত ঘোষিত নয়। তাহলে কেন এভাবে তার মৃত্যু দিন পালনের হিড়িক উঠল, প্রশ্ন নেটিজেনদের।

