পড়ুয়া চিকিৎসক তরুণীর মৃতদেহ ঘোলার বাড়িতে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন প্রতিবেশীরা, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

আমাদের ভারত, কলকাতা, ১০ আগস্ট: কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে পোষ্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের তরুণী পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনায় সারা রাজ্যজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার ওই সরকারি হাসপাতালের এমার্জেন্সি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে ঘোলার অম্বিকা মুখার্জি রোডের বাসিন্দা বাবা-মায়ের একমাত্র চিকিৎসক কন্যার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনা খবর প্রকাশ্যে আসতেই হাসপাতাল চত্বরে সঠিক তদন্তের দাবিতে চিকিৎসকরা কর্মবিরতি ডাক দেন।

এদিন হাসপাতালে মৃত চিকিৎসক তরুণীর মৃতদেহ তার মা-বাবাকে দেখতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। তাছাড়া তড়িঘড়ি হাসপাতাল চত্বর থেকে একরকম জোর করেই মা-বাবার অজান্তে পুলিশ ওই চিকিৎসক পড়ুয়া তরুণীর মৃতদেহটি ঘোলার নাটাগড়ের অম্বিকা মুখার্জি রোডের বাড়িতে নিয়ে আসায় পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। প্রায় এক ঘন্টা বাড়ির সামনেই পড়ে থাকে এলাকার কৃতী পড়ুয়া চিকিৎসকের মৃতদেহটি। ততক্ষণে বাড়ির চারপাশে ভিড় জমিয়েছেন অসংখ্য প্রতিবেশী। মৃতদেহ আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের দাবি, মেধাবী পড়ুয়ার পরিবারের সঙ্গে এই ধরনের আচরণ কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যাবস্থা করতে হবে। এটা একটা বর্বরোচিত ঘটনা। ক্ষোভ সামাল দিতে অম্বিকা মুখার্জি রোডের বাড়ির সামনে প্রচুর পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল।

এদিকে মৃত পড়ুয়া চিকিৎসকের বাড়ির সামনে উপস্থিত হন এলাকার বিধায়ক তথা বিধানসভার মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ। তাঁর দাবি, ওই তরুণীকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলেন তিনি। মৃতার বাবার দাবি, সিবিআই, সিআইডি বা নিরেপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে মেয়ের খুনের তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এই ঘটনার পর শনিবার দুপুরে মৃত চিকিৎসকের বাড়ি তার বাবা- মা’র সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়।

এদিন তিনিও সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই জঘন্য অপরাধের জন্য দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি করেন। তিনি বলেন, সমাজের মধ্যে কিছু মানুষ এমন রয়েছে যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করছে। সমাজের মানুষকে আরো সচেতন হতে হবে। আর সংবাদ মাধ্যম মানুষকে সচেতন করার কাজ করছে। হাসপাতালের যে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ছিল সেটা দেওয়া হয়নি। তবে পুরোটা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তবে এই ঘটনার জেরে শোকের ছায়া নেমেছে সোদপুরের নাটাগর এলাকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *