আমাদের ভারত, ২৮ জুলাই: অপারেশন সিঁদুর নিয়ে প্রশ্ন তোলা কংগ্রেসকে সংসদে কড়া জবাব দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর ভুলে এই যাবতীয় সমস্যা, বলে দাবি করেছেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, কংগ্রেসের কোনো অধিকার নেই এই নিয়ে প্রশ্ন করার। শাহর বক্তব্যে উঠে আসে, নেহেরুর আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া সিন্ধু জলচুক্তি ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রসঙ্গ।
সোমবার অপারেশন মহাদেবের অধীনে পেহেলগাঁও হামলায় যুক্ত তিন জঙ্গিকে খতম করেছে সেনা। সে প্রসঙ্গ তুলে অমিত শাহ বলেন, কংগ্রেসের ভুলেই যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত। সেই সময় বিভাজন খারিজ না করলে পাকিস্তান থাকত না আর এত সমস্যাও থাকতো না।
গতকাল সংসদে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিল কেন অধিকৃত কাশ্মীর দখল না করে যুদ্ধ থামানো হলো? সেই প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসকে তুলোধনা করে শাহ বলেন, ওরা যুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, আজ যে অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে এত সমস্যা তার অস্তিত্ব শুধুমাত্র জহরলাল নেহেরুর জন্য। ১৯৬০ সালে পাকিস্তানকে সিন্ধুর ৮০ শতাংশ জল দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের সিমলা চুক্তির সময় ওরাই অধিকৃত কাশ্মীরের কথা ভুলে গিয়েছিল। যদি তখন অধিকৃত কাশ্মীর ফেরত নেওয়া হতো তাহলে আমাদের ওখানে অভিযান চালানোর প্রয়োজন পড়তো না। এই সময় নেহেরুর এক তরফা যুদ্ধ বিরতি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিলেন একমাত্র সর্দার প্যাটেল।
১৯৭১ সালের ইতিহাস আজ ফের সংসদে তুলে ধরেন অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে গোটা দেশ ইন্দিরা গান্ধীকে সমর্থন জানিয়েছিল। উনি পাকিস্তানকে দু’ ভাগে ভেঙ্গেছিলেন। আজও গর্বের সঙ্গে ভারত ইন্দিরা গান্ধীকে স্মরণ করেন, আমিও করি। তবে সেই সময় ভারতের হাতে ছিল পাকিস্তানের ৯৩ হাজার যুদ্ধ বন্ধি ও ১৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা। অথচ সিমলা চুক্তির সময় কংগ্রেস সরকার অধিকৃত কাশ্মীর ফেরত দেওয়ার কথা ভুলে গেল। যদি সেই সময় অধিকৃত কাশ্মীর ফেরত নেওয়া হতো তাহলে সাপও মরত লাঠিও ভাঙ্গতো না। তখন পাক অধিকৃত কাশ্মীর তো ফেরানো হলোই না, উল্টে ১৫ হাজার বর্গ কিমি জমি ফেরত দেওয়া হল।
মঙ্গলবার সংসদে অপারেশন মহাদেব সামরিক অভিযানের কথা জানান অমিত শাহ। তিনি বলেন, গতকাল সন্ত্রাসবাদী হামলায় তিন জঙ্গি সেনার গুলিতে মারা গিয়েছে। তিনি বলেন, এই সন্ত্রাসবাদীরা পেহেলগাঁও- এর হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অপারেশন মহাদেবে আমাদের সেনাবাহিনী তাদের নিকেশ করেছে। হত তিন জঙ্গির নাম জানান অমিত শাহ। এই তিন জঙ্গির নাম সুলেমান, আফগান ও জিবরান। এই তিনজনকে খাবার যুগিয়ে সাহায্য করছিল যে ব্যক্তি তাকে আগেই আটক করা হয়েছিল। সে নিহত জঙ্গিদের দেহ সনাক্ত করেছে।
এরপরেই বিরোধীদের নিশানা দাগেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম তারা (কংগ্রেস) পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসবাদীদের মৃত্যুর খবর পেয়ে খুশি হবেন, কিন্তু দেখলাম তারা বিষয়টি নিয়ে খুশি নন, বরং হতাশ হয়েছেন।