সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৬ জানুয়ারি: বুধবারই সারদা-নারদ-রোজভ্যালি ৫ তদন্তকারী আধিকারিককে কলকাতা থেকে দিল্লি ও ভুবনেশ্বরে বদলির নির্দেশ চলে এসেছিল। সিবিআইয়ের দাবি ছিল, এটা রুটিন বদলি। কিন্তু বহুদিন ধরে তদন্তকে এক চূড়ান্ত জায়গায় নিয়ে এসে শেষ মুহূর্তে বদলি করিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত মানতে পারলেন না নারদ তদন্তের তদন্তকারী আধিকারিক রণজিৎ কুমার। তাকে দিল্লিতে বদলি করে দেওয়া হলেও পালটা সিবিআই আধিকারিককে ঋষিকুমার শুল্ককেই ই-মেল করে তিনি জানতে চেয়েছেন, কি প্রয়োজনে হঠাৎ কেন এই আচমকা বদলি! এই বিদ্রোহ অস্বস্তির পরিবেশে ফেলল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকেই।
সিবিআইয়ের সূত্রের খবর, রণজিৎ কুমার সিবিআইয়ের বদলি সংক্রান্ত নিয়মাবলী উদ্ধৃত করে দাবি করেন যে, পাঁচ বছর পর পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোনও আধিকারিকের শাখা পরিবর্তন করতে পারেন। অর্থাৎ যে আধিকারিক দুর্নীতি দমন শাখায় রয়েছেন, তাঁকে বিশেষ অপরাধ শাখায় বদলি করা যেতে পারে। ওই আধিকারিক ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, ‘স্টেশন’ পরিবর্তন অর্থাৎ কলকাতা থেকে দিল্লি বা অন্য কোনও শহরে বদলি করার ক্ষেত্রে সাধারণ ভাবে ১০ বছর ঊর্ধ্বসীমা ধরা হয়। অর্থাৎ ১০ বছরের বেশি কোনও আধিকারিক কোনও শহরে কর্মরত থাকলে তাঁকে কর্তৃপক্ষ অন্য শহরে পাঠাতেই পারেন, বদলি করে। কলকাতায় রঞ্জিৎ কুমারের কার্যকাল ৮ বছর হয়েছে। সেক্ষেত্রে তার এখনও ২ বছর বাকি রয়েছে।
রঞ্জিৎ কুমার ওই ই-মেলে এটাও দাবি করেছেন যে, নারদ তদন্ত এই মুহূর্তে খুব গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যেই এই চার্জশিট পেশ হবে, যাতে নাম উঠে আসার কথা অনেক প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রী-পুলিশ অনেকেরই। সেই পরিস্থিতিতে তাঁকে সরিয়ে দিলে তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি জানতে চেয়েছেন, এই বদলি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ কি না? সেটা যদি হয়, তবে তার কারণ কি, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। যদিও রাজনৈতিক মহলের দাবি, প্রভাবশালীদের আড়াল করতে এবং রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্তকে চিরদিনের মত চেপে দিতে শেষ মুহূর্তে এই আধিকারিকদের বদলি।