আমাদের ভারত, ২০ জানুয়ারি: রাজ্যে নির্বাচনের দামামা বেজে উঠতেই ফের বহিরাগত বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে একটি জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে, আউটসাইডারদের নিয়ে এসে আমাদের মাথাটা খাচ্ছে। মানুষের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চাইছে। অন্যদিকে ওই একই দিনে নদিয়ার বেথুয়াডহরিতে জনসভা করতে এসেছিলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। ফলে ওই মঞ্চ থেকেই মমতার এই বহিরাগত তত্ত্বের কড়া জবাব দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তার কথায় , জেপি নাড্ডা বাংলার জামাইবাবু, মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোর বউয়ের চেয়ে অনেক বেশি বাঙালি।
বেথুরাডহরির সভামঞ্চ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পাল্টা প্রশ্ন তোলেন কে বহিরাগত? বালুরঘাটের সাংসদ বলেন,”উনি বাংলার জামাইবাবু, দুদিন আগেও তার সঙ্গে আমার দেখা হল। বাংলায় কথা বলে এলাম। উনি আপনার ভাইপোর বউয়ের চেয়ে অনেক বেশি বাঙালি। বৃহস্পতিবারের সভা থেকে বেশ কয়েকটি কথাও বাংলাতে বলেছেন জেপি নাড্ডা। তিনি মমতার উদ্দ্যেশ্যছ বলেন, “এত রাগ করবেন না দিদি, স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়।” একেবারে শেষে তার মুখে শোনা গেছে জয় ভারত জয় বাংলা ধ্বনি।
আলিপুরদুয়ারে সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন। তিনি দাবি করেন, কেন্দ্র সরকার রাজ্য থেকে কর নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু রাজ্যকে প্রকল্পের জন্য টাকা দিচ্ছে না। বরং উল্টে কেন্দ্রীয় দল বিভিন্ন কারণে এসে তদন্ত চালাচ্ছে রাজ্যে। এই সবকিছুর মধ্যে তার মুখে শোনা গেছে বহিরাগত তত্ত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ভোটের এক বছর আগে থেকে এলাকায় এলাকায় পাঠাবে। দুটো বই দান করে বলবে দিল কে? আমি আবার কে?” তারপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন তুমি? কোন তুমি? আমি তো চিনি ভূমি। তার কথায় বাইরে থেকে লোকেরা এসে এখানকার মানুষের মাথা খাচ্ছে। ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে। তিনি বলেন, “আমি এখনো মনে করি মানুষের কাজ নিয়ে, ক্ষুধা নিয়ে মানুষের দুঃখ নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।”
মুখ্যমন্ত্রীকে জবাব দিতে গিয়ে বেথুয়াডহরির সভায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত বলেন, “আপনি যদি আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতিকে বহিরাগত বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বহিরাগত বলেন, তাহলে আপনাকে প্রশ্ন করতে চাই আপনার প্রাণ প্রিয় ভাইপোর বউ কোথা থেকে এসেছেন? তিনি বাঙালি, আর ভারতবর্ষের অন্য জায়গা থেকে আসা আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতি বহিরাগত?
সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, আগের নির্বাচনের সময় যাকে বহিরাগত বলে মুখ্যমন্ত্রী ও তার দল হৈচৈ করেছিল, তিনি তো পরে আবার মুখ্যমন্ত্রীর অন্তর্গত হয়ে গিয়েছেন। অর্জুন সিং নামটা মনে আছে তো? তার কথায় দেশের মধ্যে যে কেউ যেখানে খুশি গিয়ে সভা করতেই পারেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তো মেঘালয়ে সভা করে এলেন। আসল প্রশ্নটা নীতিগত অবস্থান নিয়ে।”