রায়গঞ্জে এক ব্যক্তির দ্বিতীয় স্ত্রীর রহস্যজনক পরিণতি, উত্তেজনা এলাকায়

স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ২২ ফেব্রুয়ারি: এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা ছড়িয়েছে রায়গঞ্জ শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মিলনপাড়া এলাকায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি মৃত গৃহবধূর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা খুনের অভিযোগ তুলে ধৃত স্বামীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

জানাগেছে, রায়গঞ্জ শহরের মিলনপাড়ার বাসিন্দা সমিত বিশ্বাস ওরফে সান্টু প্রথম পক্ষের স্ত্রী থাকা সত্বেও ফুলতা বর্মন নামে এক মহিলাকে বিয়ে করে। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে মিলনপাড়াতেই একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতো সে। মঙ্গলবার রাতে দ্বিতীয় স্ত্রী ফুলতা বর্মনের মৃত্যু হয়। স্বামী সান্টুর দাবি, ভাড়া বাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ফুলতা। ফুলতার স্বামী সান্টু বলেন, আমি যখন আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করি তখনও সে বেঁচেছিল। তাই আমি স্ত্রীকে কোলে করে নিয়ে বাঁচানোর জন্য হাসপাতালের দিকে ছুটি। কাউকে ডেকে না পাওয়ায় একাই নিয়ে যাই। কিন্তু তার আগেই মারা যায় সে। সান্টু এও বলে যে তার সাথে মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলা সামান্য ঝগড়াঝাটি হয়েছিল।

মৃতার স্বামী সান্টু আত্মহত্যার কথা বললেও তা মানতে নারাজ পাড়া প্রতিবেশী থেকে যে বাড়িতে তারা ভাড়া থাকে সেই বাড়ির মালিকও। তাঁদের অভিযোগ, সান্টু তার স্ত্রীকে খুন করে দেহ লোপাট করার চেষ্টা করছিল। স্থানীয় বাসিন্দা খোকন দাস জানিয়েছেন, সান্টুর প্রথম স্ত্রী ও তাদের সন্তান সন্ততি থাকা সত্বেও আবারও এক মহিলাকে বিয়ে করে এনেছে। প্রায় প্রতিদিনই এই স্ত্রীর সাথে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। সান্টু তার বর্তমান স্ত্রী ফুলতাকে খুনই করেছে। গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেলে রক্ত থাকতো না। আর যে ঘরে ফাঁস দিয়েছে বলেছে সেই ঘরেও মৃতদেহ উদ্ধার হয়নি। মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে সান্টুর নির্মিয়মান বাড়ির একটি ঘরে। যেখানে প্রচুর রক্ত পড়ে রয়েছে।

এদিকে যে বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গিয়েছে বলে মৃতার স্বামী সান্টু জানিয়েছে সেই বাড়ির মালিক হেনা দাস জানিয়েছেন, আমাদের পাশের ঘরে ফাঁসি দিল এবং তাকে নিয়েও চলে গেল সান্টু অথচ আমরা কেউই জানতে পারলাম না। আমাদের বাড়িতে ফাঁসি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে আমরা জানিই না।

গৃহবধূ ফুলতা বর্মনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর পুষ্পা মজুমদার জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে পাড়া প্রতিবেশী সকলেই সান্টুর বিরুদ্ধে তার স্ত্রী ফুলতাকে খুন করার অভিযোগ তুলেছে।

এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিলনপাড়া এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পুলিশ মৃতার স্বামী সান্টুকে আটক করেছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *