আমাদের ভারত, ১৫ এপ্রিল: লক ডাউনের নিয়ম ভেঙে একজোট হয়ে কয়েক হাজার শ্রমিকের বিক্ষোভ দেখানোর পেছনে উস্কানি দেওয়া হয়েছিল। এমনটাই দাবি করেছিল পুলিশ। আর যে এই উস্কানি দিয়েছিলেন তিনি নিজেকে একজন শ্রমিক নেতা হিসেবে দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় দফায় লকডাউন ঘোষণার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় চলো ঘরে কি ঔর (চলো ঘরের দিকে) ক্যাম্পেইন শুরু করেছিলেন বিনোদ দুবে নামে এই ব্যক্তি। তাকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি এই বিনোদ দুবে টুইটার ও ফেসবুকে রটিয়ে দিয়েছিলেন লকডাউনের মেয়াদ বাড়লে সরকার গরিব শ্রমিকদের জন্য কোন ব্যবস্থা করবেন না। তাই ঘরে ফিরে যাওয়া দরকার। নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টে বড়সড় পোস্ট করেন। তিনি সেখানে লেখেন, “সরকারের কাছে আমার অনুরোধ ১৪ ই এপ্রিল লক ডাউন উঠে যাওয়ার পর গরিব শ্রমিক মজুরদের বাড়ি ফেরার জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করা হোক। শ্রমিকদের অবস্থা এখানে করুন। অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন তারা। আমরা সরকারি সাহায্যের জন্য ১৪ বা ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। না হলে শ্রমিকরা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরবে।”
এই বিনোদ দুবের উত্তর মুম্বাইতে “ভারতীয় মহা পঞ্চায়েত “নামে একটি এনজিও আছে। এই এনজিওর মাধ্যমে তিনি শ্রমিকদের নানা পরামর্শ দেন। লকডাউনের বিধি ভেঙে সরকারি নির্দেশিকা বিরোধিতা করে শ্রমিকদের বড় জমায়েত করে বিক্ষোভের পরামর্শ দিয়েছিলেন এই বিনয়। এমনকি তার সোশ্যাল মিডিয়ার একাধিক পোস্টে আপত্তিকর ও উস্কানিমূলক কথা শোনা গেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা স্টেশনে শ্রমিক বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। বাড়ি ফেরার দাবিতে সেখানে জড়ো হয়েছিল হাজারখানেক পরযায়ী শ্রমিক। জমায়েত সরাতে শেষপর্যন্ত পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। আর তাতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ২৪ মার্চ রাত বারোটা থেকে ১৪ ই এপ্রিল পর্যন্ত টানা ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সরকার। ১৪ ই এপ্রিল প্রথম লকডাউনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দেশজুড়ে সংক্রমনের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আগামী ৩ মে পর্যন্ত ফের লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। আর এই মেয়াদ বৃদ্ধির পরেই বাড়ি ফেরার জন্য ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা বান্দ্রা স্টেশনে জড়ো হন। তারা দাবি করতে থাকেন তাদের বাড়ি ফেরার জন্য বাসের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তাদের অভিযোগ তাদের জন্য দু বেলা খাবারের প্রতিশ্রুতি থাকলেও তারা খাবার পাননি। কোনরকমে দিন গুজরান করেছেন তারা। আর সেই জন্যই এবার রাস্তায় নেমেছেন শ্রমিকরা।