আমাদের ভারত, ১৪ এপ্রিল: করোনা মোকাবিলায় সকালেই লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী। অথচ সেই দিনই সামাজিক দূরত্বকে একেবারে বুড়ো আঙ্গুল দেউয়ে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা স্টেশনে হাজির হাজার হাজার মানুষ। এরা বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। তাদের সকলেরই অভিযোগ দিনের পর দিন সামান্য খাবারটুকু পাচ্ছেন না তারা। এমনকি পারছেন না পানীয় জল। সেই জন্যই বাড়ি ফেরার চেষ্টা তাদের। আর সেই কারণেই স্টেশনের জমায়েত হয়েছেন তারা।
যেখানে করোনার পারদ ধীরে উপরে উঠছে সেখানেই এত বড় জমায়েত। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝেই লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ছত্রভঙ্গ হয় ভিড়। লকডাউনের কারনে চলছে না কোনো যাত্রীবাহী ট্রেন বাস। তাহলে কেন ওরা বান্দ্রা স্টেশনে এলো। সেই প্রশ্ন উঠেছে একাধিক মহলে। এদিকে মোদী সরকার শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে কন্ট্রোল রুম খোলার ঘোষণাও করেছে। তবু কেন এত বড় জমায়েত।
খাবার না পেয়ে যেভাবে একজোট হয়ে বাড়ি ফিরতে চাইলেন হাজার হাজার শ্রমিক, তাতে সংক্রমন ছড়ানোর অশনিসংকেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এখনো পর্যন্ত করোনায় সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়েছে মহারাষ্ট্র। আর সেখানেই এই ভিড় করোনা সংক্রমণ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এর আগে ২৮ শে মার্চ দিল্লির আনন্দ বিহার বাস স্ট্যান্ডে ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছিল। উদ্বিগ্ন মুখগুলো ছিল শুধু বাড়ি ফেরার আর্তি। সেদিনের ছবি কিংবা আজকের ছবি দেখলে বোঝা যায় না, করোনার মত মারন ভাইরাসের সংক্রমণ লক্ষ্যেই নাকি দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্বকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে সেদিনও দিল্লির বাসস্ট্যান্ডে ভীড় করেছিল পরিযায়ী শ্রমিকরা। আর সেই চিত্র স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন তুলেছিল। পরিযায়ী শ্রমিকরা যদি এভাবে রাজ্যে ফেরার জন্য ভিড় জমাতে শুরু করেন তাহলে আর লকডাউন এর অর্থ?
এরপরই রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে কেন্দ্র সরকারের তরফে বার্তা যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়া আটকাতে রাজ্যের সীমানা সিল করে দিতে হবে। পরিযায়ী শ্রমিকরা যে রাজ্যের রয়েছেন তাদের সেই রাজ্যে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু তারপরেও বদলাল না চিত্রটা। মঙ্গলবার বান্দ্রায় ভিড় করে আসে শ্রমিকরা। অনেকেই জানিয়েছেন, তারা ভেবেছিলেন আজ লকডাউন উঠে যাবে। কষ্ট করে অপেক্ষা করছিলেন তারা। কিন্তু আজই লকডাউনছর মেয়াদ ৩মে পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় মরিয়া হয়ে ওঠেন তারা। তাদের অভিযোগ তারা না খেতে পেয়ে মারা যাবেন।