আমাদের ভারত, ৯ এপ্রিল: কসবা, বর্ধমান, দুর্গাপুর, বারাসতে চাকরিহারা শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। ঘটনায় একাধিক চাকরিহারা শিক্ষক আহত হয়েছে বলে খবর।আন্দোলনকারীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে জখম হয়েছেন পুলিশের কিছু কর্মী বলে দাবি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। এই গোটায় বুধবার তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে জেলায় জেলায়।
ডি আই অফিসে চাকরি ফেরতের দাবি জানাতে গিয়েছিলেন আজ অসহায় চাকরিহারারা। সেখানে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। বারাসত, বর্ধমান রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। চাকরিহারাদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ করেছে। পাল্টা পুলিশের অভিযোগ, চাকরিহারা শিক্ষকরাই প্রথমে পুলিশের উপর হামলা করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হওয়ার পর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সভায় যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চাকরিহারাদের একটা বড় অংশ সেই আশ্বাসের ভরসা করতে পারেনি। এর ফলে বিক্ষোভ বাড়তে থাকে। বুধবার সকাল থেকে জেলায় জেলায় বিক্ষোভে নামেন তারা। ঘেরাও করেন ডি আই অফিস। পুলিশের সঙ্গে খন্ড যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন তারা।
এসএসসি ২০১৬ সালের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার ওই মামলায় পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে আদালত। যার জেরে চাকরিহারা হয় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী।
পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেছেন চাকরিহারারা। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, শাসক দলের নেতাদের একাংশ চাকরি বিক্রি করছে, সেই কারণেই সরকার যোগ্য- অযোগ্য বাছাই করলো না। যার খেসারত দিতে হলো তাদের। পুলিশের লাঠিচার্জ নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের কথায় পুলিশ দিয়ে মুখ বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে আরও বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
অত্যাচারের প্রতিবাদে শিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে বাইরে এসে নিজে সেই চিঠি ছিঁড়ে দেন প্রাক্তন বিচারপতি। তিনি বলেন, কসবা থেকে বারাসত, দিকে দিকে যেভাবে চাকরিহারা শিক্ষকদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করছে তা মেনে নেওয়া যায় না। সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এই শিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে আমার যে বৈঠকে বসার কথা ছিল তা বাতিল করলাম।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসএসসি যোগ্য- অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতিও।