আমাদের ভারত, ২২ আগস্ট: রাজ্যে উৎসবের পদধ্বনির সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের দামামার আওয়াজও জুড়ে গেছে। কারণ বছর ঘুরলে বাংলায় ভোট। তার আগে বাঙালি অস্মিতায় শান দিতে ব্যস্ত সব রাজনৈতিক দল।বাঙালি অস্মিতা রক্ষায় কে কী কী করছে সেই খতিয়ান তুলে ধরছে সবাই। একই সঙ্গে এই ইস্যুতে একে অপরকে কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়ে আক্রমণেও উদ্ধ্যত। এই আবহে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কলকাতায় এলেন এবং তাঁর মুখেও একাধিক বার ছিল বাংলা- বাঙালি ও বাঙালিয়ানার কথাই।
দমদমের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলার উন্নয়ন এবং সে ক্ষেত্রে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা বোঝাতে গিয়ে তাঁর ভাষণের গরিষ্ঠ অংশ জুড়েই ছিল শুধু বাংলা ও বাঙালি। সে বাংলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মন্দিরের নাম যেমন উঠে এসেছে, তেমনি বাঙালি মনীষীদের নাম, সর্বোপরি বাংলার গানও মোদীর কথায় এসেছে।
বঙ্গ রাজনীতির একটা অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠেছে বাঙালি অস্মিতা। সেই ইস্যুকে হাতিয়ার করে পথে নেমেছে তৃণমূল। সংসদে ঝড় তুলে বাংলা ভাষা ও বাঙালীদের হেনস্তার জন্য বিজেপি তথা কেন্দ্র সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে তারা।
কিন্তু বাংলায় একরকম এই সব কিছুর জবাব দিয়ে মোদী বাংলাতেই বলছেন, বাংলাকে ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা দিয়েছে কেন্দ্র ও তার সরকার। একই সঙ্গে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলায় বিজেপি সরকার এলে শ্যামাপ্রসাদের বাংলা ফিরিয়ে আনার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে ও বাঙালি মন পেতে মরিয়া বিজেপি। অনেক ক্ষেত্রে সজাগ ভাবেই তারা সেই দিকে এগোচ্ছেন। তাই তো বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদীর মুখে উঠে এসেছে দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দির, কালীঘাটের কালী মন্দির, করুণাময়ী কালী মন্দির, দমদমের বালাজি হনুমান মন্দিরের কথা। এমনকি একেবারে ঠিকানাসহ রাস্তার নাম উল্লেখ করেছেন তিনি।কৌশিকী অমাবস্যার বিকেলে মোদী বলেন, দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দির ও কালীঘাট মন্দির, শ্রী শ্রী ১০৮ করুণাময়ী কালী মন্দির, দমদম বালাজি হনুমান মন্দির, রামকৃষ্ণ সেবা মন্দির এই শহরের সব স্থানের দেবী দেবতাদের আমার প্রণাম।
এর আগেও নির্বাচনে বাংলার দুর্গা পুজো রাজনৈতিক ইস্যু হয়েছিল। আবারও কলকাতার দুর্গাপুজোর কথা তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, এমন এক সময় কলকাতায় এসেছি যখন দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি চলছে। কুমরটুলিতে মা দুর্গার প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। বড় বাজার থেকে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত কলকাতা নতুন রঙে সাজছে। আর উন্নয়নের এই পর্ব সেক্ষেত্রে যুক্ত হয়ে খুশি দ্বিগুণ হয়ে গেল।
কেবল মন্দির, মনীষী, দুর্গাপূজা নয়, বাংলায় কথাও বলেন তিনি। নবজাগরণের কথা, নব বিকাশের কথা, শ্যামাপ্রসাদ- এর বাংলা ফিরিয়ে আনার কথা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।আবেদন করেছেন মানুষ যাতে ২৬- এর নির্বাচনে বিজেপিকেই ক্ষমতায় আনেন।