আমাদের ভারত, ৬ আগস্ট: চিন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি মাসে শেষে আন্তর্জাতিক জোট সাংহাই কো অপারেশন অর্গানাইজেশনের রাষ্ট্র নেতাদের বৈঠক রয়েছে চিনে। সেই বৈঠকে যোগ দিতে বেজিং যাচ্ছেন মোদী। লাদাখে ভারত- চিন সংঘর্ষের পর এই প্রথমবার চিন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন শুল্ক নিয়ে বারবার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ভারতকে, তখন প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে তৈরি হচ্ছে একাধিক জল্পনা।
ইতিমধ্যেই ভারতের ওপর ২৫% শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য শুল্ক আরো বৃদ্ধি করার হুমকি দিয়েছে আমেরিকা। রাশিয়ার থেকে জ্বালানি কেনা দেশগুলির মধ্যে ভারতের পাশাপাশি রয়েছে চিনও। ফলে এই কুটনৈতিক পরিস্থিতিতে মোদীর চিন সফর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
চিনের তিয়ানজিন শহরে আগামী ৩১ আগস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বর এস সি ও রাষ্ট্র নেতাদের বৈঠক রয়েছে। এই আন্তর্জাতিক জোটে সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানও। এসসিও বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ যোগ দিতে যাবেন কি না তা এখনো স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। তবে পেহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড এবং অপারেশন সিঁদুর পরবর্তী সময় এসসিও ও রাষ্ট্রনেতাদের বৈঠকে সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে মোদী কোনো বার্তা দেন কিনা সেদিকে নজর থাকবে।
এর আগেও এসসিও’র প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং বিদেশ মন্ত্রীর পৃথক সম্মেলন হয়ে গেছে। ফলে রাজনাথ সিং ও জয়শঙ্কর উভয় চিন সফরে গিয়েছিলেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গে নাম না করে পাকিস্তানকে নিশানা করে এসেছেন রাজনাথ। স্পষ্ট করে দিয়েছেন সন্ত্রাসবাদের বিরোধী লড়াইয়ে ভারত কোনো দু’মুখো আচরণ বরদাস্ত করবে না। সম্মেলনে পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই অবস্থান স্পষ্ট করে এসেছেন। এবার রাষ্ট্র নেতাদের সম্মেলনে শাহবাজ শরিফ উপস্থিত থাকলে মোদী কোনো কড়া বার্তা দেন কি না তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যে ২০১৯ সালে শেষ চিন সফরে গিয়েছিলেন মোদী। তারপর লাদাখে ভারত- চিনের সংঘর্ষের পর থেকে দু’ দেশের সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে, কিন্তু গত বছর ব্রিকসের সম্মেলনে গিয়ে পার্শ্ববর্তী বৈঠকে সাক্ষাৎ করেন মোদী ও শি জিন পিং। তারপর থেকে সীমান্ত সমস্যা কাটে দু’ দেশের মধ্যে। কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত হয়।
সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির আবহে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরো নিবিড় করার চেষ্টা করেছে উভয় দেশ। ভারত এবং চিনের শক্তির কথা বলতে গিয়ে হাতি এবং ড্রাগনের উপমা ব্যবহার করেছে তারা। চিনের বক্তব্য, ড্রাগন এবং হাতির মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক দু’দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ড্রাগন আর হাতিকে একসঙ্গে নাচিয়ে দিতে হবে একে অপরের বিরুদ্ধে, কথা না বলে পরস্পরকে সাহায্য করতে হবে, তাতেই দু’দেশের লাভ। যদি এশিয়ার বৃহত্তম দুই অর্থনীতি একজোট হয় তাহলে সমগ্র বিশ্বের জন্য তা লাভজনক। এই আবহে মোদীর চীন সফরে জিনপিং- এর সঙ্গে আলাদা করে কোনো বৈঠক হয় কি না তা নিয়ে কৌতুহল আরো বৃদ্ধি পেল।