আমাদের ভারত, ১ সেপ্টেম্বর: রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থামানোর প্রস্তাব দিলেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকের ফাঁকে পুতিনের সঙ্গে এক ঘন্টা বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। ইউক্রেন সমস্যার সমাধান করে শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তা দেন তিনি। জানান, আমি আশাবাদী। যুদ্ধ শেষ করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে রাশিয়া ও ইউক্রেন। নোবেলের লোভে ট্রাম্পের যুদ্ধ থামানোর ব্যর্থ চেষ্টার মাঝে ভারতের এই পদক্ষেপ ট্রাম্পের স্বপ্ন ভঙ্গের সামিল বলেই মনে করেছে কূটনৈতিক মহল।
রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ব্যর্থ হবার পর এই যুদ্ধের দায়ভার ভারতের উপর চাপিয়েছে আমেরিকা। এমনকি রুশ তেল কেনায় ভারতের উপর চাপানো হয়েছে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক। আমেরিকার এই পদক্ষেপ ভারত ও চিনের মধ্যে বন্ধুত্বকে দৃঢ় করেছে। চিনে এসসিও বৈঠকে মোদী, জিংপিং ও পুতিন- এর ছবি বিশ্বকে বার্তা দিয়েছে এক নয়া সমীকরণের।
এই নয়া পরিস্থিতির মাঝে সোমবার আলাদাভাবে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন মোদী। সেখানে যুদ্ধ থামিয়ে শান্তির উদ্দেশ্যে পদক্ষেপের জন্য পুতিনকে বার্তা দেন মোদী। শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে কোনো গঠনমূলক পদক্ষেপকে ভারত স্বাগত জানায়। মানবতার খাতিরে এই যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে দ্রুত শান্তির উপায় খুঁজে বের করতে হবে বলেই বার্তা দিয়েছে ভারত।
২০০২ সাল থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে। যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এই যুদ্ধে। আর ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যুদ্ধ থামিয়ে নিজেকে শান্তি দূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে মুখিয়ে থেকেছেন ট্রাম্প। তার জন্য একাধিক কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু ট্রাম্পের উপর সম্পূর্ণভাবে যে ভরসা রাখতে পেরেছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট তাও নয়। এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ ভালো সম্পর্ক। সেই কথা মাথায় রেখে যুদ্ধ থামানোর জন্য ভারতের দ্বারস্থ হয়েছে ইউক্রেন। বিষয়টিতে ভারত যাতে অগ্রসর হয় তার প্রস্তাব দিয়েছেন খোদ জেলেনেস্কি। একাধিকবার এই ইস্যুতে মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের সঙ্গে যুদ্ধ থামানোর বার্তা ট্রাম্পের ট্রাম্প কার্ড কেড়ে নেওয়ার মতো বলেই মনে করছে অনেকে।
চিনের এসসিইও সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইউক্রেন সঙ্কট মেটাতে চিন ও ভারতের প্রশংসা করেছেন পুতিন। একই সঙ্গে ভারত, রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ইউক্রেনের যুদ্ধ থামানো যাচ্ছে না বলে যে অভিযোগ আমেরিকা করেছে তা খারিজও করেছেন পুতিন। তিনি বলেছেন, আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো আর পশ্চিমী দুনিয়ার হস্তক্ষেপের জন্য এই যুদ্ধ শুরু হয়। একই সঙ্গে লাগাম ছাড়া মার্কিন শুল্ক চাপানোর তীব্র নিন্দা করেছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি।