আমাদের ভারত, ১০ জানুয়ারি:রাজ্যের দু’দিনের সফরে এসে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী শনিবার সন্ধ্যায় শহরের ওল্ড কারেন্সি বিল্ডিংয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে মোদী বলেন, দেশের ইতিহাসে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে উপেক্ষা করা হয়েছে। দেশের ইতিহাকে শুধুমাত্র সিংহাসন দখল, হিংসা এবং উত্তরাধিকার প্রাপ্তির ইতিহাসের মধ্যে সীমিত করে দেওয়া হয়েছে।
মোদী বলেন, ভারতের সংস্কৃতি, পরম্পরা ও ঐতিহ্যের উত্তরণ ঘটাতে তাকে নতুন করে সংরক্ষিত করতে হবে। আর কলকাতা থেকেই সেই উদ্যোগের সূচনা করা হলো।
তিনি বলেন ভারতের হেরিটেজকে একুশ শতকের উপযুক্ত করে সংরক্ষিত করতে হবে। তাকে রিব্র্যান্ডিং এবং রেনোভেট করে রিহাউস করার যে কাজ দেশব্যাপী করা হবে তার সূচনা হলো পশ্চিম বাংলার মাটি থেকেই।
মোদী বলেন, কলকাতা ভারতের সর্বোৎকৃষ্ট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম। তাই কলকাতার ভাবনা অনুসারেই এবার কলকাতার সমৃদ্ধ পরিচয়কে নতুন রূপে দুনিয়ার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখানকার চার আইকনিক ইমারতের আধুনিকরণের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।
দেশের সংস্কৃতি ইতিহাস নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক যে ইংরেজ শাসনের সময় এবং স্বাধীনতার পরে দেশের যে ইতিহাস লেখা হয়েছে তাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে তুলে ধরা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৩ সালের একটি লেখনীতে লিখেছেন, যেটা আমরা পরীক্ষার জন্য পড়ি সেটা ভারতের ইতিহাস নয়। কেউ কেউ মানুষ বাইরে থেকে এসেছে, পিতা ছেলেকে হত্যা করেছে, ভাই ভাইকে মেরেছে, সিংহাসনের জন্য সংঘর্ষ হয়েছে। এটা ভারতের ইতিহাস নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুরুদেব নিজের লেখনীতে এই বক্তব্যেত প্রেক্ষিতে ঝড় ও ঝঞ্ঝার মত খুব গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, যত বড়ই ঝড় আসুক না কেন, তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ঐ সংকটের সময় সেখানকার মানুষ সেই ঝড়ের কি ভাবে মোকাবিলা করেছিল তা জানা। মোদী বলেন ভারতের ইতিহাসের বহু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পেছনে পড়ে রয়েছে। তা ইতিহাসে জায়গা পায়নি।”
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আসলে মোদি বলতে চেয়েছেন বিভিন্ন সময় বিদেশী আক্রমণের মুখে ভারতবর্ষ কিভাবে তা প্রতিহত করেছে এবং সেই আক্রমনকারীদের হাত থেকে কিভাবে নিজেদের ধর্ম, সংস্কৃতি রক্ষা করেছে, একের পর এক আক্রমণ এর পরও কীভাবে আজও ভারত তার ঐতিহ্য বহন করে চলছে, সেই বিষয়ে ইতিহাসে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
মোদী বলেন আমাদের দেশের ইতিহাসে কেবলমাত্র কিছু লোকের ক্ষমতা দখল, সংঘর্ষ, হিংসা ও উত্তরাধিকারের লড়াইতেই সীমিত করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেটা বলেছেন তার চর্চা করা দেশের ইতিহাসের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।