“উচ্চারণে ত্রুটি আছে জানি তবু বাংলা বলার লোভ সামলাতে পারলাম না” ষষ্ঠীতে বাঙালির সাথে একাত্ম মোদী

আমাদের ভারত, ২২ অক্টোবর: বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজার শুরু ষষ্ঠীর বোধন দিয়ে। সেই মহা ষষ্ঠীর সকালে বাঙালির সামনে এসে বাংলায় কথা বাঙালির মন জয় করলেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্য শুরু হোক বা শেষ,কিংবা মধ্যভাগ সম্পূর্ণ বক্তব্যের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল বাংলা। প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন বাংলা শুনে আজ অবাক হয়েছেন অনেকেই। মোদী বলেছেন বাংলা এতো মিষ্টি ভাষা যে বলার লোভটা সামলাতে পারলাম না।

বিজেপি মানেই হিন্দি বলয় রাজ্য গুলির দল। এমন একটা বদনাম এরাজ্যে পদ্মশিবিরের বিরুদ্ধে রয়েছে। কিন্তু ষষ্ঠীর সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই বদনাম একেবার ঘুচিয়ে দিলেন। আজ বাঙালির সঙ্গে একাত্ম হয়ে উঠলেন নরেন্দ্র মোদী। যদিও সমালোচকরা বলবেন তিনি বাংলা সম্পর্কে হোমওয়ার্ক করেছেন। কিন্তু যাই হোক দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাংলা ও বাঙালির দুর্গাপূজা সঙ্গে এতটা একাত্ম হওয়া উৎসব মুখর বাঙালির কাছে নতুন পাওয়া, তা স্বীকার করতেই হবে।

দুর্গাপুজোর শুভক্ষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন “উমা এলো ঘরে, বাংলার এই সনাতন পরম্পরা রয়েছে।” বাংলাতেই তিনি বলেন প্রতিটি নারীকে মাতৃরূপে শ্রদ্ধা জানাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জানালেন নারীদের প্রতি নির্যাতন রুখতে দেশে এখন কড়া আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। মহিলাদের সুরক্ষার জন্য তার সরকার যথেষ্ট তৎপর বলেও দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিন মোদীর বক্তব্যের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাংলার অবিচল আসা-যাওয়া ছিল। তিনি বলেন বাংলা ভাষা এত মিষ্টি যে এই ভাষা বলার লোভ সামলাতে পারলাম না। জানি আমার উচ্চারণে বেশকিছু খামতি রয়েছে। তার জন্য মার্জনা করবেন। পবিত্র বাংলারভূমি কে প্রণাম জানিয়ে এই বাংলার মানুষকে দুর্গাপূজা কালীপূজা ও দীপাবলীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মানুষ উৎসবে মেতে উঠলেও করোনার সতর্কতার কথাও তিনি মনে করিয়েছেন।

একই সঙ্গে তিনি বলেছেন মা দুর্গা অন্নপূর্ণা রূপে পূজিত হন। আর বাংলার মায়েরা বলেন “আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।” এই প্রবাদ মনে করিয়ে তিনি আত্মনির্ভর ভারতের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন সোনার বাংলা তখনই হবে যখন বাঙলার কৃষক, শ্রমিক স্বনির্ভর হবে।

মোদী আজ একের পর এক বাংলার স্বনামধন্য ব্যক্তিদের কথা তিনি মনে করিয়েছেন তার বক্তৃতায়। রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, রাজা রামমোহন রায়, বঙ্কিমচন্দ্র, কাজী নজরুল ইসলাম, ঋষি অরবিন্দ, মাতঙ্গিনী হাজরা, ক্ষুদিরাম বোস, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর,সত্যজিৎ রায়, সুচিত্রা সেন, উত্তম কুমারের মতো বহু বিখ্যাত বাঙালীদের অবদানের কথা স্বীকার করেন তিনি। মোদী বলেন বাংলাকে পূর্ব ভারতের মূল কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আজকে ভারতবর্ষে যেখানে রয়েছে তাতে বাংলার অবদানের কথাও স্বীকার করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *