পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ অক্টোবর: শনিবার বিকেল নাগাদ চন্দ্রকোনা শহরের টাউন হলে বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। তাতে আমন্ত্রিত হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মিতালী বাগ, ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আশিষ হুদাইত, জেলার যুব সভাপতি সহ একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্ব ও ব্লকের নেতা কর্মীরা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন খোদ ব্লক সভাপতি হীরালাল ঘোষ। কিন্তু ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে গড়হাজির থাকতে দেখা যায় দলেরই বিধায়ক তথা চন্দ্রকোনা বিধানসভার বিধায়ক অরূপ ধাড়াকে।
প্রসঙ্গত, চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির গোষ্ঠী কোন্দল নতুন নয়। আগেও একাধিক বার তা প্রকাশ্য এসেছে।চন্দ্রকোনায় দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব ফের একবার প্রকাশ্য এলো বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে। বিধায়ক অনুষ্ঠানে ডাক পাননি বলেও মত তৃণমূলের একটা অংশের।
বিধায়ককে আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে ব্লক সভাপতি হীরালাল ঘোষকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অবশ্য জানান, “দলের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে সেখানে বিধায়ক সহ অনেক নেতৃত্বই রয়েছে, সেখানে বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়, পাশাপাশি বিধায়ককেও তার হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। কাজে হয়তো ব্যস্ত থাকায় তিনি দেখেননি।”
অনুষ্ঠান শেষে বিধায়কের গড়হাজির প্রসঙ্গে সাংসদ ও জেলা সভাপতিকে প্রশ্ন করা হলে গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তারা পাল্টা বিধায়কের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসাবে কাজে ব্যস্ত তাই আসতে পারেননি। পাশাপাশি বিজেপির কটাক্ষের পাল্টা সাংসদ ও জেলা সভাপতি জানান, জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমাদের সবারই কোনো না কোনো কাজ থাকে তাই আসতে পারেনি। আর যারা এটা নিয়ে মাতামাতি করছে তারা হেরে গিয়ে এসব নিয়ে নিজেদের একটু উপশম দিচ্ছে। বিজেপি ধর্ম নিয়ে মাতামাতি করে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে এছাড়া তাদের কিছু কাজ নেই। আমাদের দলের জনপ্রতিনিধিরা সবসময় মানুষের পাশে থাকে। বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন কাজে এখনও আমরা ব্যস্ত বলে জানান সাংসদ মিতালী বাগ।
যদিও এবিষয়ে বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তৃণমূলের বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠান আর তাতে গড়হাজির বিধায়ক, তা হাতিয়ার করে কটাক্ষ বিজেপির। চন্দ্রকোনার বিজেপি নেতা সুদীপ কুশারি বলেন, “চন্দ্রকোনার মানুষ বিগত বেশ কয়েকমাস ধরে দেখছেন, তৃণমূলের যে শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্ব রয়েছে বিধায়ক ও ব্লক সভাপতি এবং তাদের অনুগামীদের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য এসেছে। তারা একে অপরকে আক্রমণ করছে। এটা আজকের দিনে প্রতিষ্ঠিত সত্য। এটা ওদের কাটমানির লড়াই, কার দিকে ক্ষমতা থাকবে তার লড়াই চলছে ওদের মধ্যে। এই লড়াই নিয়ে আমরা চিন্তিত নই, আমরা চিন্তিত মানুষের স্বার্থ, অধিকার নিয়ে।”
চন্দ্রকোনায় দলীয় কোন্দল ঠেকাতে জেলা থেকে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যন্ত একাধিক বার কড়া বার্তা দিলেও নিচুস্তরে যে তার কোনো কাজ হয়নি তা আরও একবার প্রকাশ পেল বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানকে ঘিরে।