আমাদের ভারত, হাওড়া, ১৭ মার্চ: করোনা নিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শকেই চ্যালেঞ্জ করে ফেললেন শিবপুরের বিধায়ক জটু লাহিড়ি। সোমবার হাওড়ার রামরাজাতলার শীতলাপূজা উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এসে তিনি যেমন নিজেই মাস্ক পরবেন না বলে জানান, তেমনি উদ্যোক্তাদেরও মাস্ক পরতে নিষেধ করেন। এককথায় মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শকে কার্যত ফুৎকারে উড়িয়ে দেন এই তৃণমূল বিধায়ক।
গতকাল রামরাজতলায় শীতলা পুজোর অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন বিধায়ক জটু লাহিড়ি। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি ভগবানের বিশ্বাস করি, তাই আমি মাক্স পড়ব না। আমার ভেতরে যে শক্তি আছে সেই শক্তিই করোনা থেকে রক্ষা করবে। তিনি অন্যদেরও পরামর্শ দেন, আপনাদের ভেতরের যে শক্তি আছে তা বাড়ান, কারণ বাইরে থেকে যখন কোনও জীবাণু শরীরে ঢোকার চেষ্টা করে তখন ভেতরে শক্তি তাকে বাধা দেয়। তাই নিজের শক্তি বাড়ালে কেউ আক্রান্ত হবে না, মাক্স পবতেও হবে না
করোনা সংক্রমণ আটকাতে যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাক্স পড়ার পরামর্শ দিয়েছে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও মাস্ক পরতে বলছেন, এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই পরামর্শ দিয়েছেন। সেখানে তাঁর এই বক্তব্য কি বিজ্ঞানবিরোধী নয়? তিনি কি মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শকে চ্যালেঞ্জ করছেন না? এই প্রশ্নের উত্তরে বিধায়ক বলেন, “কে কী বলল তাতে আমার মাথা ব্যথা নেই। আমি ভগবানে বিশ্বাস করি, আমার নিজের বিশ্বাসে আমি বিশ্বাসী। আমার আত্মশক্তি আমাকে রক্ষা করবে। প্রতিষেধক ক্ষমতা বাড়ালে আর কিছু লাগবে না। মাস্ক পড়ব না পরতেও বলবো না।” তাঁকে সাংবাদিকরাএই নিয়ে জিজ্ঞাসা করায় তাদেরও অসম্মান করেন বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, বাজে কথা বলবেন না। ছোট মুখে বড় কথা মানায় না।
উল্লেখ্য করোনা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার সব স্কুল, কলেজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেমন ছুটি ঘোষনা করেছে, তেমনি চলছে লাগাতার প্রচার ও কর্মসূচি। কয়েকদিন আগেই দুই মন্ত্রী অরূপ রায় ও রাজীব ব্যানার্জি মাস্ক বিলি করেছেন। এই অবস্থায় জনবহুল স্থানে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শকে অস্বীকার করে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শকেই অস্বীকার করলেন বলে মনে করছে অনেকেই।
অনুষ্ঠানে জটু লাহিড়ী বলেন আমি কাউকে মাক্স পরতে পরামর্শ দেই না, অথচ মুখ্যমন্ত্রীর মাস্ক পড়ার পরামর্শ নিয়ে তাঁর বিধানসভা এলাকায় প্রচুর ফ্লেক্স টানানো হয়েছে, তাতে একদিকে মুখ্যমন্ত্রী অন্যদিকে জটু লাহিড়ীর ছবি রয়েছে, সেখানে মাক্স পরতে বলা হয়েছে। অথচ ওই অনুষ্ঠানের ঘোষিকা মাক্স পরে থাকায় বিধায়ক তাঁর মাক্স খুলে ফেলতে নির্দেশ দেন পরে অবশ্য ওই মহিলাকে তা ফিরিয়ে দেন। এই ঘটনায় অনেকেরই প্রশ্ন, তাহলে বিজেপি নেতা নারায়ণ চ্যাটার্জি গোমুত্র প্রাণের পরামর্শ দিয়ে কী অন্যায় করেছেন? তিনিও তো বলছেন, গোমূত্র পাণ করলে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে!