TMC, Chhatna, আবাস যোজনার তালিকায় গরমিল! ইন্দাসের পর ছাতনায় দোতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাসে নাম তৃণমূল নেতার

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৩ ডিসেম্বর: আবাস যোজনার তালিকা নিয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু হতেই প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে তালিকা তৈরির ত্রুটি। প্রকৃত প্রাপকদের বঞ্চিত করা হয়েছে। পরিবর্তে পাকা বাড়ি থাকা সত্বেও শাসক দলের কেষ্ট বিষ্টুদের নাম তালিকায় নথিভুক্ত হয়েছে। সম্প্রতি পাত্রসায়েরের বালসি পানাপুকুরের বাসিন্দা তৃণমূলের অঞ্চল সহ- সভাপতি নিমাই মাঝি ও তার ভাইয়ের নাম আবাস যোজনার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই জেলাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সেই জের কাটাতে না কাটতেই ফের আর এক তৃণমূল নেতার নাম দেখা যায় আবাস যোজনার তালিকায়।

নিজের নামে পাকা দোতলা বাড়ি থাকা সত্বেও আবাসের তালিকায় নাম রয়েছে ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ সুকুমার চট্টোপাধ্যায়ের। এই তালিকা সামনে আসতেই তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়ার জন্য তড়িঘড়ি আবেদন জানিয়েছেন শাসক দলের এই নেতা। এই ঘটনাকে সততার নজির বলে তুলে ধরে তৃণমূল নেতৃত্ব প্রশংসা কুড়ানোর চেষ্টা করলেও বিষয়টি নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি নেতৃত্ব।

এই প্রেক্ষিতে উল্লেখ্য, বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের জিড়রা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এমন বহু পরিবার রয়েছে যাদের মাথা গোঁজার নিজস্ব ঠাঁইটুকুও নেই, আর তা থাকলেও তা অত্যন্ত জরাজীর্ণ মাটির বাড়ি।তাতেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনও ক্রমে তারা দিন যাপন করছেন। তা সত্বেও আবাস তালিকায় তাদের অধিকাংশেরই নাম নেই। সেই তালিকায় রয়েছে তৃণমূল নেতা তথা ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ সুকুমার চট্টোপাধ্যায়ের নাম। সুকুমার চট্টোপাধ্যায়ের জিড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুবড়া গ্রামে নিজস্ব দোতলা বাড়ি রয়েছে। বাড়িটি সম্প্রতি তৈরি হয়নি।

এই ঘটনার দু’দিন আগে জেলার পাত্রসায়র ব্লকের বালসী ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পানপুকুর মাঝি পাড়ার শাসক দলের দুই নেতার নামে একই অভিযোগ ওঠে।এই দুই নেতা হলেন নিমাই মাঝি তৃণমূলের অঞ্চল সহ সভাপতি ও তার ভাই আনন্দ মাঝি তৃণমূলের অঞ্চল কোর কমিটির সদস্য। এই দুই ভাই একসঙ্গেই থাকেন। তাদের রয়েছে এক প্রাসাদোপম দোতলা বাড়ি। তারপরেও আবাস যোজনার তালিকায় নাম ছিল পরিবারের। সম্প্রতি সমীক্ষার কাজ শুরু হতেই আবাস যোজনার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য স্থানীয় বিডিও অফিসে লিখিত আবেদন জানান ওই পরিবারের পক্ষে আনন্দ মাঝি। তাদের দাবি, বছর পাঁচেক আগে যখন আবাসের সমীক্ষা হয়েছিল, তখন তাদের পাকা বাড়ি ছিল না। পরবর্তীতে তারা পাকা বাড়িটি তৈরি করেছেন।
সমীক্ষার কাজ শুরু হতেই এটা ধরা পড়ে। এই ঘটনা জানাজানি হতেই সমালোচনার ঝড় উঠেছিল জেলায়। সেক্ষেত্রেও ঘটনাটিকে সততার নজির বলে প্রচার করে শাসক দল।

অন্যদিকে বিরোধী দল বিজেপির পক্ষে কটাক্ষ করা হয়। তাদের বক্তব্য, জনরোষের ভয়েই তড়িঘড়ি আবাস যোজনার তালিকা থেকে নাম বাতিলের আবেদন করেন তৃণমূল নেতা। এমন কান্ড তৃণমূলের কাছে সততার প্রতীক।

ছাতনায় কীভাবে আবাস তালিকায় তার নাম উঠল সে বিষয়ে চুপ সুকুমার চট্টোপাধ্যায়। সুকুমার চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, তিনি একজন পুরোহিত। যখন আবাসের সমীক্ষা হয়েছিল তখন তার পাকা বাড়ি ছিল না। মাটির বাড়িতে বসবাস করায় সাধারণ ভাবেই তার নাম আবাস তালিকায় জায়গা পেয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি পাকা বাড়ি করেছেন। তাই আবাস তালিকায় নিজের নাম দেখতেই তিনি তা বাতিলের জন্য আবেদন করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *