পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ জুন: কথিত আছে গঙ্গার এ পাড়ের সবচেয়ে বড় মিলন মেলা হলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ীর বারোয়ারি মেলা। পাঁচ বছর পর এবার আবার কাশীশ্বর জিউ বারোয়ারি কমিটির পরিচালনায় মহা ধুমধামের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হলো বারোয়ারি উৎসব। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এই মহা মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনের দিন থেকে টানা ৩৫ দিন ধরে দিনরাত অখন্ড হরিনাম সংকীর্তন চলে। সেই সঙ্গে মেলার সাংস্কৃতিক মঞ্চে প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হয় নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতিদিন ভিড় করেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। এই হাজার হাজার মানুষের পিপাসা মেটাতে দীর্ঘ ৩৫ দিনের এই উৎসবে কেশিয়াড়ী দর্পন সমাজসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে “জলসত্র” এর ব্যবস্থা করা হয়।
দীর্ঘ ৩৫ দিন ধরে দর্পন পরিবারের সদস্য সদস্যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ হাজার মানুষকে পানীয় জল দান করেন। সঙ্গে ছিল ছোলা, বাতাসা ও বিস্কুট। স্বাদ পরিবর্তনের জন্য আমপানা, স্কোয়াস, ওআরএস, নুন-চিনি-লেবুর সরবতও বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে দর্পণের জলসত্র থেকে। দীর্ঘ এই সময়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন, বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের জন্মদিন ও পরিবেশ দিবস সাড়ম্বরে পালিত হয় দর্পণের জলসত্রে স্টলেই। পাশাপাশি প্রতিদিন প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা ছিল দর্পণের স্টলে।
এই জলসত্রের উদ্বোধন করেন চিকিৎসক ডাঃ শান্তনু পাত্র। জলসত্রের সমাপ্তি অনুষ্ঠান হয় বারোয়ারি কমিটির ২১ জনের মূল কমিটির সদস্যের উপস্থিতিতে বৃক্ষরোপণ ও হলুদ সুতোর সৌভাতৃত্বের বন্ধনের মধ্য দিয়ে। দর্পণের সভাপতি সমাজকর্মী প্রদীপ শাসমল, সম্পাদক চন্দন দাস সহ দর্পণের সমস্ত সদস্য-সদস্যারা দিনরাত পরিশ্রম করে এই জলসত্রটিকে সাফল্য মন্ডিত করে তোলেন।
বারোয়ারী কমিটির পক্ষে সভাপতি আশিস মিশ্র, যুগ্ম সম্পাদক দেবাশিস সুর ও পবিত্র শীট সহ অন্যান্যরা দর্পণের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এই জলসত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা সাহিত্যিক ব্রজকিশোর পৈড়া এই কাজটি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার জন্য দর্পণের নেতৃত্ব ও সদস্য-সদস্যাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।