আমাদের ভারত, বাংলাদেশ, ১৩ আগস্ট: সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সরকারি সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের আবেদন জানালো বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড: মুহাম্মদ ইউনুসকে স্মারকলিপিতে মঙ্গলবার লিখেছেন, “এহেন পরিস্থিতিতে বিনীত নিবেদন-
১) অনতিবিলম্বে সাম্প্রদায়িক হামলা ও সহিংসতা বন্ধে দ্রত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
২) সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেফতার ও বিচারের সম্মুখীন করা হোক।
৩) ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন এবং জখমীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হউক। যারা ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে তাদের জায়গাজমি, বসতভিটা, উপাসনালয় তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
আন্দোলনের প্রায় শেষ পর্যায়ে হঠাৎ করে গত ৪ আগস্ট বিকেল থেকে আমরা অন্তত ৫টি জেলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে হামলা ও হুমকির নানান ঘটনার খবর জানতে পারি।
৫ আগস্ট থেকে তা তীব্রতর হয়। আমাদের সূত্র ও সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৫০টিরও অধিক জেলায় সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মূল লক্ষ্য ছিল সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, বসতভিটি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়।
এসবে হামলা হয়েছে, ব্যাপক লুটপাট হয়েছে, কোথাও কোথাও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, জমিজমা দখল করা হয়েছে। নারী নির্যাতন হয়েছে। হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। চাঁদাবাজি, দেশ ছাড়ার হুমকি, জমি দখল ও দখলের চক্রান্ত আজও অব্যাহত আছে।
এই পরিস্থিতিতে সারা দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক হিংসা বন্ধের দাবিতে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ছাত্র-জনতা, নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতী প্রতিবাদ করার জন্যে রাস্তায় নেমে এসেছে এবং তারা হিংসা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিবাদ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
হামলার ঘটনা বেশ খানিকটা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। খানিকটা স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করেছে। তবে সংখ্যালঘু জনজীবনে ব্যাপক শঙ্কা ও উদ্বেগের আজও অবসান ঘটেনি।
এহেন পরিস্থিতিতে আপনার সাথে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের এ বৈঠক গভীর তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করি। কেননা, তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।